জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলের রাজনৈতিক মেনুফেস্টে পার্থক্য রয়েছে। আদর্শে পার্থক্য রয়েছে; কিন্তু ক্ষমতায় যাবার পর আওয়ামী লীগ আর বিএনপির এক চরিত্র। সবকিছুতে দলীয়করণ, দুর্নীতি আর লুটপাট।
গুরার বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান অডিটোরিয়ামে মাগুরায় জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের দুর্নীতি মাশাআল্লাহ! ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ব্যাংকে খেলাফি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২১ হাজার কোটি টাকা কিন্তু আজকে খেলাফি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। আর গত ১২ বছরে দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খালি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, দুবাই সব বিভিন্ন দেশে এসব টাকা পাচার হয়ে গেছে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, সামনে নির্বাচন। এ নির্বাচনে যদি বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যায় তাহলে আওয়ামী লীগের কী হবে আল্লাহ জানেন! আর আওয়ামী লীগ যদি আরেকবার ক্ষমতায় আসে তাহলে বিএনপি মুসলিম লীগ হয়ে যাবে। তাই উভয় দলই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে পাগল হয়ে গেছে। ক্ষমতায় যাবার জন্যে তারা উন্মাদ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধান সম্মত নির্বাচন করতে চায়। আবার বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায়। অথচ বিগত সময়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ বিভিন্ন নির্বাচনের সময়ে ও পরে আজকের বক্তব্যের উলটো কথা বলেছে। নির্বাচন পক্ষে নিতে তারা যখন যেটা দরকার সেটিই চায়; কিন্তু জনগণকে নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই।
তিনি আরও বলেন, লাখ লাখ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শেষ করে বেকার হচ্ছে। তাদের জন্য ওই দুটি দলের কোনো রোডম্যাপ নেই। দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। বাজারে গেলে গায়ে আগুন ধরে যাচ্ছে। অথচ সমাবেশের নামে তারা এখন ঢাকার পরিস্থিতি অস্থিশীল করে তুলেছে।
মাগুরা জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সেলিনা হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জহিরুল হক জহির, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন আশরাফ, নড়াইল জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, যশোর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মুফতি ফিরোজ শাহ, মাগুরা জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক সিরাজুস সায়েফিন সাইফ, সাধারণ সম্পাদক খান রবিউল হক মিঠু প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে সেলিনা হাসানকে সভাপতি এবং খান রবিউল হক মিঠুকে সাধারণ সম্পাদক এবং সিরাজুস সায়েফিন সাইফকে ১নং যুগ্ম সম্পাদক করে মাগুরা জেলা জাতীয় পার্টির কমিটি ঘোষণা করেন মহাসচিব।