নিজের ক্ষমতাচ্যুতির পেছনে ফের যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত বছরের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে হারার পর থেকে ওয়াশিংটনকে দায়ী করছেন ইমরান। যদিও মার্কিন প্রশাসন তার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সাবেক ক্রিকেটার বলেছেন, তাকে মার্কিন চাপে দেশের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইককে দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ করেছেন ইমরান খান। তার এ সাক্ষাৎকার প্রকাশ হয়েছে শনিবার।
সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যেদিন রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন সেদিনই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে মস্কো। তিনি যদিও এই অভিযানের উদ্দেশ্য সমর্থন করেননি, আবার এর নিন্দা জানাতেও অস্বীকার করেছেন।
এর কারণ হিসেবে ইমরান খান বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সই হওয়া একটি বাণিজ্য চুক্তি বহাল রাখার জন্য তিনি রাশিয়ার অভিযানের নিন্দা জানাতে চাননি। কিন্তু আমেরিকার পক্ষ থেকে পাকিস্তানের ওপরে মারাত্মকভাবে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয় এবং তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে।
ইমরান খান আরও বলেন, এই সামরিক অভিযানের আগে পাকিস্তান রাশিয়ার সঙ্গে সস্তায় তেল ও গম কেনার চুক্তি করে। সে সময় যদি তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতেন তাহলে এই চুক্তির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়তো এবং তাতে দেশের জনগণ আরো কষ্টের মধ্যে পড়ে যেত। এসব কথা বিবেচনা করে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানান। অথচ আমেরিকা জাতিসংঘের মাধ্যমে পাকিস্তানকে পাশে চেয়েছিল।
ইমরান খান বলেন, ২০২২ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানের কূটনীতিকদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয় এবং সেখানেই আমেরিকার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা না হলে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর পরই তার বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয় এবং মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা পাকিস্তানের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
অবশ্য ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই ইমরান খান আমেরিকার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করে আসছেন। কিন্তু ওয়াশিংটন বরাবরই বলে আসছে, তারা ইমরান খানের উৎখাতের সঙ্গে জড়িত নয়।