শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে তীরে গিয়ে তরী ডুবল আফগানিস্তানের। শ্রীলংকার বিপক্ষে রানের পাহাড় ডিঙ্গাতে নেমে বেঁধে দেওয়া টার্গেটের শেষ বলে ৩ রান করতে না পারায় সুপার ফোরের লড়াইয়ে ছিটকে যায় আফগানিস্তান।
এশিয়া কাপের ১৬তম আসরে কোয়ালিফাই করার জন্য শ্রীলংকার বিপক্ষে আফগানদের টার্গেট দাঁড়ায় ৩৭.১ ওভার তথা ২২৩ বলে ২৯২ রান। অসম্ভব এ লক্ষ্যকে সম্ভব করতে ইনিংসের শুরু থেকেই ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট খেলে যায় আফগানরা; কিন্তু শেষদিকে টপাটপ উইকেট পতনের কারণে কোয়ালিফাই করতে পারেনি আফগানরা।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ১৬তম আসরের ষষ্ঠ ম্যাচে মুখোমুখি হয় শ্রীলংকা-আফগানিস্তান। এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৯১ রান করে শ্রীলংকা।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ বলে ৬টি চার আর ৩টি ছক্কার সাহায্যে সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন কুশাল মেন্ডিস। এছাড়া ৪১ রান করেন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। ৩৬, ৩৩ ও ৩২ রান করে করেন চারিথ আসালঙ্কা, দুনিথ ওয়ালালাগে, দিমুথ করুনারত্নে। ২৮ রান করেন ও মহেশ থিকসানা।
শ্রীলংকার ইনিংস শেষ হওয়ার পরই এশিয়া কাপের সুপার ফোরে কোয়ালিফাই করার জন্য আফগানদের টার্গেট দেওয়া হয় ৩৭.১ ওভারে ২৯২ রান। লংকানদের বিপক্ষে এমন কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট খেলে আফগানরা।
৮.১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান করে বিপাকে পড়ে যায় আফগানিস্তান। চতুর্থ উইকেটে হাশমতউল্লাহ শহিদির সঙ্গে ৬৩ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন রহমত শাহ। ৪০ বলে ৫টি চার আর এক ছক্কার সাহায্যে ৪৫ রানে ফেরেন রহমত।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। দলকে কাঙ্ক্ষিত জয় উপহার দিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই চার-ছক্কা হাঁকাতে থাকেন। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২৬ ওভারেই দলীয় স্কোর ২০০ পূর্ণ করে আফগানিস্তান।
২৬.২ ওভারে ৪ উইকেটে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ২০১ রান। জয়ের জন্য ৬৫ বলে প্রয়োজন ছিল ৯১ রান। হাতে ছিল ৬ উইকেট। এরপর সময়ের ব্যবধানে উইকেট পতনের কারণে কোয়ালিফাই করাতো দূরে থাক, নিশ্চিত জয়ের ম্যাচেও হেরে যায় আফগানরা।
২৭তম ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে ধরা পড়েন নবি। তার আগে ৩২ বলে ৬টি চার আর ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৬৫ রান করে ফেরেন নবি।
মোহাম্মদ নবি যখন সাজঘরে ফেরেন তখন কোয়ালিফাই করার জন্য আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৬৪ বলে ৯১ রান। ৪৮ রানে ব্যাটিংয়ে ছিলেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি।
এরপর ১৩ বলে ২২ রানে ফেরেন করিম জানাত। ৬৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় ৫৯ রানে ফেরেন হাশমতউল্লাহ শহিদি। ১৫ বলে ২৩ রান করে ফেরেন নজিবুল্লাহ জাদরান।
কোয়ালিফাই করার জন্য শেষ ৭ বলে আফগানদের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। দুনিথ ওয়ালালাগের করা ৩৭তম ওভারের প্রথম দুই বলে কোনো রান নিতে পারেননি রশিদ খান। তৃতীয় বলে চার, চতুর্থ বল ডট। শেষ দুই বলে ব্যাক টু ব্যাক বাউন্ডারি হাঁকান রশিদ খান।
৩৮তম ওভারের প্রথম এবং কোয়ালিফাই করার শেষ বলে আফগানদের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ রান। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার করা সেই ওভারের প্রথম বলে স্পিনার মুজিব উর রহমান বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলে আফগানদের সুপার ফোরে কোয়ালিফাই করার আশা ভেস্তে যায়।
সুপার ফোরে কোয়ালিফাই করার আশা ভেস্তে যাওয়ার পরও ম্যাচ জয়ের সুযোগ ছিল আফগানদের সামনে। জয়ের জন্য শেষ ১২.৫ ওভারে আফগানদের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ রান। হাতে ছিল ১ উইকেট। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার করা সেই ওভারের চতুর্থ বলে ফজলহক ফারুকি আউট হলে জয়ের উল্লাসে মাতে শ্রীলংকা। তারা আফগানদের ২ রানে হারিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপ থেকে সুপার ফোর নিশ্চিত করে।