• সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৩ অপরাহ্ন

দেশে মুক্তিপণ আদায়, ইরাকে প্রবাসীকে অপহরণ করে

Reporter Name / ৭৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩

জীবিকার সন্ধানে ইরাকে যাওয়া বাংলাদেশি যুবকদের ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

দুই বছর তদন্তের পর ইরাকের সেই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ জনকে দেশের কয়েক জেলা থেকে গ্রেফতার করেছে এ তদন্ত সংস্থা। গ্রেফতার আটজন হল- আলী হোসেন, শামীম, শিরিন সুলতানা, মোহাম্মদ ঘরামী, নবিউল ঘরামী, শাহিদা বেগম, সাহনাজ আক্তার লিপি ও আকবর সরদার।

বরিশাল, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মাগুরা এবং খুলনায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার কুদরত-ই খুদা জানান।

ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ওই আটজনকে আদালতে তোলার পর তাদের মধ্যে ছয়জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

মোসলেম মোল্লা (৩০) নামের এক যুবকের মায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে এ চক্রের সন্ধান পান পিবিআই কর্মকর্তারা।

নবাবগঞ্জের দড়িকান্দা গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মোসলেম ২০১৬ সালে কাজের খোঁজে ইরাকে যান। সেখানে ২০২১ সালে সেলিম মিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

পুলিশ সুপার কুদরত-ই খুদা বলেন, আলাপ পরিচয়ের পর মোসলেমকে আরও ভালো বেতনের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্রের হাতে তুলে দেন সেলিম। আনোয়ার, শাহনেওয়াজ, রুহুল আমিন, মনির, হাসিবুর এবং সাব্বির ওই চক্রের সদস্য। তারা মোসলেমকে অন্য জায়গায় নিয়ে আটকে রাখে এবং নির্যাতন চালায়।

পুলিশ সুপার বলেন, এরপর ইমো অ্যাপের মাধ্যমে মোসলেমের মা খতেজা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। মোসলেমকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে।

পিবিআই কর্মকর্তা জানান, যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তারা ইরাকে থাকা চক্রটির হোতা শাহনেওয়াজের স্ত্রী, স্ত্রীর ভাই-বোন ও স্বজন।

ছেলেকে বাঁচানোর জন্য খতেজা বেগম ১২টি বিকাশ নাম্বরে ২৬ বারে মোট ছয় লাখ টাকা পাঠান। কিন্তু টাকা পাওয়ার পরও চক্রটি আরও তিন লাখ টাকা দাবি করে।

কুদরত-ই খুদা বলেন, আনোয়ার, শাহনেওয়াজ, রুহুল আমিন, মনির, হাসিবুর, সাব্বির ইরাকে অবস্থান করলেও বাংলাদেশে তাদের পরিবারের সদস্যরা ওই মুক্তিপণের টাকা বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকান থেকে নিজেদের পারসোনাল বিকাশ নম্বরে নিয়ে ক্যাশ আউট করে নেয়।

এরপর খতেজা বেগম নবাবগঞ্জ থানায় ২০২১ সালের ১ মার্চ মামলা করেন। মামলাটি পরে পিবিআইয়ের হাতে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মোসলেম বলেন, তারা আমাকে কোনো একটি বাসার রুমে আটকে রেখেছিল এবং আমার সঙ্গে আইনফোনটি নিয়ে নিয়েছিল, যে ফোনের দাম ২ হাজার ডলার। ওই রুমে তিনি ছাড়াও বন্দি ছিলেন আরও তিনজন। তাদের সবাইকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হতো।

মোসলেম বলেন, যারা টাকা-পয়সা দিত, তাদের ওপর নির্যাতন তুলনামূলক কম হতো। বন্দি অবস্থায় একদিন কৌশলে শেকল খুলে তিনি পালাতে সক্ষম হন। এরপর দেশে ফিরে আসেন।

পিবিআই কর্মকর্তা কুদরত-ই খুদা বলেন, শাহনেওয়াজ ওই অপহরণ চক্রের নেতা। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। মুক্তিপণের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাঠানোর তথ্যও তদন্তে মিলেছে।

দুই বছর ধরে তদন্ত করে এ চক্রের সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে কুদরত-ই খুদা বলেন, ইরাকে থাকা শাহওনেওয়াজ ও দলের লোকজনকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category