• রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন

বাড়তি দামের আশায় রপ্তানিকারকরা ডলার ধরে রাখছেন

Reporter Name / ২১৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৩

ঈদের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় কিছু ব্যাংকের শাখা খোলা থাকলেও রপ্তানি বিল বা রপ্তানি আয়ের ডলার তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না। রপ্তানিকারকরা ডলারের বাড়তি দাম পাওয়ার আশায় বিল ধরে রাখছেন। কেননা আর চার থেকে পাঁচ কার্যদিবস ধরে রাখতে পারলেই প্রতি ডলারে এক টাকা করে বাড়তি পাবেন। প্রতি মাসের শুরুর দিকে রপ্তানিতে ডলারের দাম এক টাকা করে বাড়ানো হচ্ছে। মে মাসের শুরুর দিকেই ডলারের দাম আরও এক টাকা বাড়বে। এজন্য তারা বিল ধরে রাখছেন।

সূত্র জানায়, ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলো থেকেই এখন বেশিরভাগ রপ্তানি বিল আসছে। ওইসব দেশে ঈদের ছুটি নেই। ফলে তাদের স্বাভাবিক কার্মকাণ্ড চলছে। এ কারণে বিলগুলো ঈদের ছুটির মধ্যেও আসছে। রপ্তানিকারকদের অনেকে নগদ অর্থের সংকটে ভুগছেন। তারা বিল নগদায়ন না করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে পারছেন না। ঈদের ছুটিতে পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার সুবিধার্থে রপ্তানি বিল নগদায়ন করতেই কিছু ব্যাংক খোলা রাখা হচ্ছে।

রাজধানীর কয়েকটি ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্যিক শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এদিন রপ্তানি বিল নগদায়ন হয়েছে খুবই কম। স্বাভাবিক দিনের তুলনায় ১০ শতাংশও হয়নি। রপ্তানি বিল নগদায়ন হলে বা রপ্তানির ডলার বিক্রি হলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বেচাকেনার বিশেষ কক্ষে জমা হবে। সেখান থেকে ডলারের বিপরীতে নগদ টাকা গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। ওই অর্থে গ্রাহক বেতন-বোনাস দিতে পারবেন।

রপ্তানি বিল জমা যেমন কম, তেমনি বিক্রিও কম। ব্যাংকাররা জানান, একাধিক কারণ এমন হতে পারে। বিদেশি ক্রেতারা রপ্তানির বিল জমা করছেন না বা জমা করলেও সেগুলো বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে (বিদেশি ব্যাংককে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট) জমা হচ্ছে না। এছাড়া জমা হলেও রপ্তানিকারকরা বিল ধরে রাখছেন, বিক্রি করছেন না। তারা (রপ্তানিকারকরা) ইচ্ছে করলে কিছুদিন বিল ধরে রাখতে পারেন।

গত ডিসেম্বর থেকে প্রতি মাসেই রপ্তানি বিলের দাম গড়ে ১ টাকা করে বাড়ানো হচ্ছে। ফলে ৯৯ টাকার রপ্তানি বিল এখন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা করে। ঈদের ছুটি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।শবেকদরের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা ছিল।  বৃহস্পতিবার-শুক্রবারও খোলা থাকবে। এই দুই দিন রপ্তানি বিল নগদায়নের সুযোগ থাকলেও সেগুলো হচ্ছে না। মে মাসের দুই তারিখ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলে তারা প্রতি ডলারে আরও এক টাকা বেশি পাবেন বলে আশা করছেন। কারণ মে মাসের শুরুর দিকেই রপ্তানি বিলের দাম আরও এক দফা বাড়ানো হতে পারে। সে হিসাবে আর বাকি মাত্র চার থেকে পাঁচ কার্যদিবস।

এ প্রসঙ্গে একজন রপ্তানিকারক বলেছেন, ইউরোপ আমেরিকায় মন্দার কারণে এখন রপ্তানি বিল দেশে আসছে না। তারপরও ক্রেতা ধরে রাখার জন্য বাকিতে পণ্য রপ্তানি করে যাচ্ছি। রপ্তানি বাবদ যে ডলার আসে সেগুলো দিয়ে এলসি খোলাই যায় না। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দামও এখন অনেক বেশি। তারপরও চেষ্টা করছি ডলার সংগ্রহ করে বেতন বোনাস দিতে।

রিটেনশন কোটায় (ব্যবসার প্রয়োজনে খরচ করার জন্য রপ্তানিকারক তার বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্টে রপ্তানি আয়ের একটি অংশ জমা রাখতে পারেন) অনেক ডলার জমা থাকে। সেখান থেকে ডলার এনে তো বেতন বোনাস দিতে পারেন। এমন প্রশ্নের জবাবে ওই রপ্তানিকারক বলেন, এখন রিটেনশন কোটায় ডলার জমা থাকে কম। যে কারণে সেখান থেকে আনার সুযোগ নেই। যেগুলো থাকে সেগুলো বিদেশে ক্রেতাদের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রয়োজনে খরচ করা হয়।

এদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পোশাকশিল্প এলাকার বেশিরভাগ শাখাই খোলা ছিল। ওই এলাকার বাইরের অনেক শাখা রয়েছে যেগুলোতে পোশাকশিল্পের লেনদেন হয়। এর মধ্যে মতিঝিল, দিলকুশা, শ্যামলী, ধানমন্ডিসহ ঢাকা শহরের অনেক শাখা খোলা ছিল। এগুলোতে পোশাকশিল্পের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সাধারণ গ্রাহকদের। তারা যেমন টাকা তুলেছেন, তেমনি জমাও দিয়েছেন। চেক নগদায়নের কাজও করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্লিয়ারিং হাউস খোলা থাকায় এসব কাজ দ্রুত হয়েছে। এছাড়া টাকা স্থানান্তরের কাজও করেছেন।

বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা : ঈদের আগে গ্রাহকদের জরুরি ব্যাংকিং কাজ সম্পন্ন করতে বিশেষ ব্যবস্থায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কিছু ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। বিশেষ ব্যবস্থায় তৈরি পোশাক শিল্পনির্ভর এলাকায় কিছু ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। এ ছাড়া গ্রাহকদের সুবিধার্থে ঈদের ছুটিতে অনলাইন, মোবাইল ব্যাংকিংসহ এটিএম বুথ সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে। এজন্য এটিএম বুথ ও এজেন্টের কাছে পর্যাপ্ত নগদ টাকার জোগান নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category