গোয়েন্দা দপ্তর (ডিবি অফিস) এখন ভাতের হোটেলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আজকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলছেন, মানুষ নাকি অভিযোগ নিয়ে যায়, তার নিরাপত্তার জন্য সেখানে নেওয়া হয়। আমরা তো জানি, গোয়েন্দা দপ্তরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জন্য একটি আতঙ্ক ঘর, আয়না ঘর সেখানে আছে। আর এখন কি হয়েছে জানেন? এখন গোয়েন্দা দপ্তর হয়েছে ভাতের হোটেল। তাই না? ভাতের হোটেল।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক রায়ের প্রতিবাদে’ এ সমাবেশ হয়।
রিজভী বলেন, ‘অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সেখানে করা হচ্ছে। আমরা অনেক ঘটনা জানি, কোথায় কী ষড়যন্ত্র হয়, কাকে কোথায় থেকে নিয়ে আসা হয়… কত কিছু করা হয়। আমাদের নেতাদের ধরে উধাও করা হয় ৪/৫দিন। তারপরে বলা হয় উনি মহানগর গোয়েন্দা দপ্তরে আছেন বা ডিবি পুলিশের কাছে আছে। কয়েকদিন পরে থানায় দেওয়া হয়।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকারের পতন ঘটাতে না পারলে চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের জনগণ তার কাছে বন্দি হয়ে যাবে। শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী) পতন ঘটাতে হবে। আমার-আপনার সন্তানের নিরাপত্তার জন্য তার পতন ঘটাতে হবে।
রিজভী বলেন, না হলে এ দেশে আর কেউ কথা বলতে পারবে না। চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের জনগণ বন্দি হয়ে যাবে শেখ হাসিনার কাছে। এই বন্দিত্ব থেকে আমাদের মুক্ত হতে হলে তার পতন ঘটাতেই হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৮০০ কোটি টাকা নাই হয়ে গেল, পাচার হয়ে গেল। তখন যিনি গভর্নর ছিলেন আতাউর রহমান তার দায় নাই? বরং শেখ হাসিনা তাকে পুরস্কৃত করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন তাকে।
রাশেদ খান মেননের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সম্রাটের মতো আজীবন ক্ষমতা ভোগ করবেন, সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন না। আর আপনি কেউ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বললে ষড়যন্ত্র পান। আপনারা বিনা ভোটের এমপি, নিশিরাতের এমপি। কয়দিন আগে না মেনন সাহেব আপনি নিজেই বলেছিলেন ১৮ সালে কোনো নির্বাচন হয় নাই। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন ও স্বাভাবিক রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে। দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন বা ন্যায়বিচার নেই। দেশে ন্যায়বিচার থাকলে যারা এখন ক্ষমতায় আছেন তারা তাদের অপকর্ম ও অপরাধের জন্য জেলে থাকতেন।’
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সঞ্চালনা করেন মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান।
সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজমুন নাহার বেবী, নেওয়াজ হালিমা আর্লি, শাম্মী আখতার, শাহানা আখতার সানু, এলিজা জামান, ঢাকা মহানগর নেতা নায়াব ইউসুফ, রুমা আখতার বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশের পর একটি বিক্ষোভ মিছিল বেরিয়ে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় ঘুরে নয়া পল্টনে ফিরে শেষ হয়।