ফসল উৎপাদনে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অনেক সময় ঝুঁকি তৈরি করে। আবহাওয়ার আগাম সঠিক তথ্য না থাকায় কৃষি উপকরণসমূহের অপচয়সহ সামগ্রিক উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এজন্য কৃষকের কাছে আবহাওয়ার আগাম তথ্য থাকাটা জরুরি।
এ সংকট মোকাবিলায় ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কৃষিতে ‘সাব- সিজনাল টু সিজনাল’ আবহাওয়ার স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে কৃষকেরা পরবর্তী ৪ সপ্তাহ থেকে ৩ মাস পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাবে, যা তাদের সেই আবহাওয়া অনুযায়ী ফসল নির্বাচন থেকে শুরু করে উৎপাদন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
রাজধানীর বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরের মাল্টিপারপাস হলে ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল’ স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার যাত্রা শুরু করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেন, এ নতুন স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থা একটি অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, যা আবহাওয়ার ধরণ সম্পর্কে সঠিক এবং সমযোপযোগী তথ্য দেওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং এবং বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্সের মতো সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
কৃষি সচিব আরও বলেন, এ পূর্বাভাস ব্যবস্থা শুধুমাত্র আমাদের কৃষকদের জন্যই নয়, কৃষি খাতের সমগ্র মূল্য শৃঙ্খলের জন্যও উপকারী। এটি আমাদের নীতিনির্ধারকদের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য কার্যকর নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন করতে সাহায্য করবে। এটি আমাদের কৃষি উপকরণ সরবরাহকারী, প্রসেসর এবং রপ্তানিকারকদের তাদের সাপ্লাই চেইন পরিচালনা করতে, ঝুঁকি কমাতে এবং বিশ্ব বাজারে তাদের প্রতিযোগিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় নেদারল্যান্ডের ‘ওয়েদার ইম্প্যাক্ট’-এর গবেষক এবং প্রকল্প সমন্বয়ক বব অ্যামারলান সাব- সিজনাল টু সিজনাল আবহাওয়ার স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত এবং প্রায়োগিক দিক তুলে ধরেন। এ স্বয়ংক্রিয় পূর্বাভাস ব্যবস্থার মাধ্যমে আবহাওয়া বুলেটিন, কৃষি-আবহাওয়া তথ্য সার্ভিস কীভাবে কৃষকদের নিকট পৌঁছে দেওয়া যায় এ বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শাহ্ কামাল খান। তিনি বলেন, আমাদের কৃষকদের জন্য তাদের খামার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় সাব-সিজনাল এবং সিজনাল আবহাওয়ার তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা বাস্তবায়ন করতে ডিএই, বিএমডির সক্রিয় সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পরিচালক মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি এডভাইজার ওসমান হারুনি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস।