এমএলএম (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং) ব্যবসার আড়ালে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমার সাবেক দেহরক্ষী টারজান খীসার (৪২) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাঙ্গামাটি দুদক কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম। টারজান খীসা রাঙ্গামাটির কল্যাণপুর এলাকার যতীন প্রকাশ খীসার ছেলে। ঘটনার সময়ে তিনি পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।
সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত পরিচয় গোপন করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবসায়ী পরিচয়ে ব্যাংক হিসাব খোলা, লেনদেন করা এবং এমএলএম ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ মাসে দ্বিগুণ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে ২৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৫ টাকার লেনদেন করে তা স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে দণ্ডবিধির ৪২০, ১৬৮, মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, টারজান খীসা ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পুলিশের নায়েক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি পুলিশের নায়েক পদে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে সন্তু লারমার রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতির ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কর্মী ছিলেন।
জেএসএসের সাবেক কর্মী হওয়ায় সন্তু লারমারসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার সুযোগে টারজান খীসা আর্থিকভাবে দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও বর্তমানে আর্থিক অবস্থা অনেক মজবুত। তার নামে ‘রিবেই এন্টারপ্রাইজ’ নামে ডাচ-বাংলা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্সি রয়েছে। টারজান খীসা ২০১১ সালে ইউনি পে-২ এর প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক আতিকুল আলম নিউজকে বলেন, টারজান খীসার বিরুদ্ধে রাঙ্গামাটি এলাকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী দুদকে অভিযোগ দেন। অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে মামলার সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। কমিশনের অনুমোদন পেয়ে রাঙ্গামাটি দুদক কার্যালয়ে মামলা দায়ের করা হয়।