• শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

সিটিসেলের ভবিষ্যৎ কী?

Reporter Name / ৩৫৩৯ Time View
Update : শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩

সংযোগ সেবা বন্ধ হয়েছে, তরঙ্গ ও নবায়ন করা তরঙ্গের (স্পেক্ট্রাম) বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। শুধু ছিল লাইসেন্স, এবার সেটিও বাতিল হলো সিটিসেলের। ফলে আর হয়তো আলোর মুখ দেখছে না মোবাইল অপারেটর সিটিসেল। আর এরই সঙ্গে সাঙ্গ হতে চলেছে একটি তুমুল জনপ্রিয় মোবাইলের জীবন-ইতিহাস।
জানা যায়, সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) তার সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কমিশন বৈঠকে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টির জন্য সরকারের পূর্বানুমোদন চেয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে বিটিআরসি। তবে এখনও বিষয়টি অনুমোদন পায়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিটিসেলের (প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড) কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে সব মিলিয়ে ২১৮ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার ৬৫৯ টাকা।
১৯৮৯ সালে সে সময়ের সরকারের নির্দেশে বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড (বিটিটিবি) বাংলাদেশ টেলিকম (প্রা.) লিমিটেডের অনুকূলে মোবাইল অপারেটরের লাইসেন্স ইস্যু করে। পরবর্তী সময়ে নাম পরিবর্তন করে এর নাম রাখা হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই বিটিআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিটিসেলের গ্রাহকদের দুই সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প সেবা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। সে হিসেবে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় পান গ্রাহকরা। অপরদিকে বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় রাজধানীর মহাখালীতে অপারেটরটির প্রধান কার্যালয়ে ঢুকে তরঙ্গ বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন বিটিআরসির কর্মকর্তারা।
এরপর সিটিসেল উচ্চ আদালতে গেলে বিষয়টি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর চলে যায়। বিটিআরসি ওই নোটিশের পর আপিল বিভাগে যায় প্রতিষ্ঠানটি। আপিল বিভাগ ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট এই অপারেটরকে বকেয়া ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলে। এজন্য তারা সময় পেয়েছিল দুই মাস।
সিটিসেল আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগে গেলে গত বছরের ৩ নভেম্বর শর্তসাপেক্ষে অবিলম্বে অপারেটরটির তরঙ্গ খুলে দেওয়ার নির্দেশ আসে সর্বোচ্চ আদালত থেকে। দুই দিন পেরিয়ে গেলেও তরঙ্গ ফিরে না পেয়ে ফের আদালতে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এরমধ্যে তাদের পক্ষ থেকে বকেয়ার ১৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। পরে আপিল বিভাগ আদেশ দেন, ১৯ নভেম্বরের (২০১৬) মধ্যে সিটিসেল বকেয়ার ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করলে আবারও তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে বিটিআরসি। বন্ধ হওয়ার ১৭ দিন পর আবারও চালু হয় সিটিসেল। ৬ নভেম্বর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির একটি দল মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সুইচ টিপে চালু করে। এর দুদিন পরে আবারও বন্ধ হয়ে যায় সংযোগ। আজ অবধি তা বন্ধই আছে।
জানা যায়, আংশিক বকেয়া পরিশোধ করার পর সিটিসেলের এখনও বকেয়ার পরিমাণ ২১৮ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার ৬৫৯ টাকা।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সিটিসেলের অনুকূলে কমিশন থেকে ইতোপূর্বে বরাদ্দকৃত ও নবায়নকৃত সব তরঙ্গ এবং রেডিও কমিউনিকেশন ইকুইপমেন্ট লাইসেন্স (নবায়নকৃত) একই বছরের ৭ আগস্ট বাতিল করা হয়। এছাড়া একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে সরকারের বকেয়া (২১৮ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার ৬৫৯ টাকা) পরিশোধ না করায় সিটিসেলের ২জি সেলুলার লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না মর্মে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর ৩০ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেওয়া সিটিসেলের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বিটিআরসি সিটিসেলের ২জি সেলুলার লাইসেন্স বাতিলের লক্ষ্যে সরকারের পূর্বানুমোদন চেয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category