ব্যবসা-বানিজ্য, ক্রয়-বিক্রয়, উৎপাদন ও বণ্টন মানুষের জীবনের একটি বিশাল অংশ দখল করে আছে। কারণ পণ্য দ্রব্যাদির আদান-প্রদান এমন একটি প্রয়োজন, যা না হলে মানবজীবন অচল হয়ে পড়ে।
এ স্বভাবজাত চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে ইসলাম নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষকে ব্যবসা পরিচালনা করতে উদ্বুদ্ধ করে।
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ।’ (সুরা আন নিসা: ২৯)
ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহের গুরুত্ব ইসলামে অনস্বীকার্য। সততা ও আমানতদারিতার সঙ্গে বৈধ পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করলে কিয়ামতের দিন নবী ও শহীদদের সঙ্গী হবে বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী (কিয়ামতের দিন) নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১২০৯)
আর যারা ব্যবসায় প্রতারণার আশ্রয় নিবে, ওজনে কম দিবে, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করবে কিংবা মিথ্যা বলে মানুষকে ধোঁকা দিবে কুরআন ও হাদিসে তাদেরকে কঠোর হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘ধ্বংস তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। তাদের অবস্থা এই যে, লোকদের থেকে নেবার সময় পুরো মাত্রায় নেয় এবং তাদেরকে ওজন করে বা মেপে দেবার সময় কম দেয়। এরা কি চিন্তা করে না, একটি মহাদিবসে এদেরকে উঠানো হবে?’ ( মুতাফফিফীন, আয়াত ১-৬।)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে , ‘কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তিন ব্যক্তির সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলবেন না, তাদের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। তাদের একজন যে ব্যক্তি তার ব্যবসায়িক পণ্যকে মিথ্যা কসম খেয়ে বিক্রি করে।’ (তিরমিজি : ১০৬)
অতএব আমাদের উচিত, সততা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করা, অবৈধ উপার্জন ও লোভ- লালসাকে সংবরণ করা। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুক। আমিন।
লেখক: ইসলাম বিষয়ক গবেষক