• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন

একটি পবিত্র আমানত ভোট

Reporter Name / ৩২ Time View
Update : রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫

ভোট দেওয়া এক ধরনের সাক্ষ্য। কাউকে ভোট দেওয়ার অর্থ হলো এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, সে সৎ, যোগ্য এবং দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর। আর সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সত্য ও ন্যায়সংগত সাক্ষ্য দেওয়া জরুরি। আল্লাহতায়ালা বলেন, হে ইমানদাররা, তোমরা হয়ে যাও আল্লাহর বিধানাবলি পালনের জন্য সদাপ্রস্তুত এবং ন্যায়সংগত সাক্ষ্য প্রদানকারী। [সূরা মায়িদা : ০৮]।

মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া বৈধ নয়। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যাপারে কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.)কে কবিরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, (কবিরা গুনাহ হলো) আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা করা, মানুষ হত্যা করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। [সহি বুখারি, ২৬৫৩]।

ভোট দেওয়া এক ধরনের সুপারিশও বটে। কাউকে ভোট দেওয়ার অর্থ হলো, তাকে জনপ্রতিনিধি বানানোর সুপারিশ করা। আর সুপারিশ ভালো কাজের করতে হয়। মন্দ কাজের সুপারিশ করা বৈধ নয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, যে ভালো সুপারিশ করবে, তা থেকে তার জন্য একটি অংশ থাকবে। আর যে মন্দ সুপারিশ করবে, তার জন্যও তা থেকে একটি অংশ থাকবে। [সূরা নিসা : ৮৫]।

ভোট দেওয়ার মাধ্যমে প্রার্থীকে নিজের প্রতিনিধি হিসাবে বাছাই করে নেওয়া হয়। আর প্রতিনিধির কাজের ব্যাপারে শরীয় মূলনীতি হলো, প্রতিনিধির কাজ প্রতিনিধিত্ব দানকারীর কাজের মতোই বিবেচিত হয়। এসব কারণে ভোট দেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই-বাছাই ও চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভোট দিতে হবে এমন ব্যক্তিকে, যে সৎ, নীতিবান এবং দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর। অসৎ, দুর্নীতিবাজ ও আল্লাহদ্রোহী প্রকৃতির লোককে ভোট দেওয়া যাবে না। এমন লোকদের ভোট দেওয়া মিথ্যা সাক্ষ্যদান, মন্দ সুপারিশ ও ভুল ব্যক্তিকে নিজের প্রতিনিধি নির্বাচন করার নামান্তর।

অতএব, অসৎ, দুর্নীতিবাজ ও আল্লাহদ্রোহী প্রকৃতির ব্যক্তিকে ভোট দেওয়া জায়েজ হবে না। যদি কোনো প্রার্থীর ব্যাপারে জানা থাকে, সে নির্বাচিত হয়ে খুন, দুর্নীতি, আল্লাহদ্রোহিতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ইত্যাদি অপকর্ম করবে এবং এটা জেনেও কেউ তাকে ভোট দেয়, তবে উক্ত প্রার্থীর কৃত অপকর্মের গুনাহের একটা অংশও তার আমলনামায় যোগ হবে।

অবশ্য কেউ যদি প্রার্থীর ব্যাপারে এমন কিছু না জানে, বরং সে সৎ ও নীতিবান মনে করেই তাকে ভোট দেয়, আর নির্বাচিত হওয়ার পর ওই ব্যক্তি খুন, দুর্নীতি, আল্লাহদ্রোহিতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন ইত্যাদি অপকর্মে জড়িত হয়, তবে এর দায় ভোটদাতার ওপর বর্তাবে না, বরং ওই নির্বাচিত ব্যক্তির ওপরই বর্তাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category