গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পূর্বচান্দরা বোর্ডমিল এলাকার কারখানায় পানি পান করে গত দুই দিনে কমপক্ষে ২ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়েছেন। ওই কারখানায় গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই ঘটনায় কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গুরুতর অসুস্থ শ্রমিকদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় কারখানা দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিক ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার পূর্বচান্দরা বোর্ড মিল এলাকার কারখানায় গত সোমবার শ্রমিকরা কারখানায় কাজ করছিল। এ সময় কিছু শ্রমিক কারখানার পানি পান করলে তাদের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এভাবে ধীরে ধীরে ওই দিন কমপক্ষে শতাধিক শ্রমিক বমি এবং পাতলা পায়খানা হয়ে কারখানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের উপজেলার সফিপুর তানহা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরের দিন মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় কাজে যান। পরে পানি পান করার পর ওই দিনও আরও প্রায় শতাধিক শ্রমিক একইভাবে বমি এবং পাতলা পায়খানা করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের উদ্ধার করে সফিপুর তানহা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বেশির ভাগ শ্রমিকের অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকার মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এ ঘটনায় কারখানা আগামী দুই দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কারখানার ডায়িং সেকশনের শ্রমিক বলেন, মঙ্গলবার কারখানায় কাজে যোগদান করি। যোগদানের কিছুক্ষণ পর পানি পিপাসা হলে পানি পান করি। এরপর থেকে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে সফিপুর তানহা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হঠাৎ করে মাথা ঘুরে আমি পরে যাই। পরে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হলে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
সফিপুর তানহা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, গত দুই দিনে আমাদের হাসপাতালে মোয়াজ উদ্দিন কারখানার দেড় শতাধিক শ্রমিক বমি ও পাতলা পায়খানা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা শেষে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনো অনেকে ভর্তি রয়েছে। শুনেছি আরও অনেককে ঢাকার মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মোয়াজ উদ্দিন টেক্সটাইল অ্যান্ড নিট ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, গত সোমবার থেকে কারখানার শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের সফিপুর তানহা হেলথ কেয়ার হাসপাতালসহ ঢাকার মহাখালীতে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। পানি পান করে এরকম হয়েছে কিনা বলতে পারছি না। তবে মনে হয় ফুড পয়জনিংয়ের কারণে এমনটা হতে পারে। তবে কারখানার পানি পরীক্ষার করার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কারখানা দুই দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যয় কারখানা কর্তৃপক্ষ বহন করবে।