• বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

অদ্ভুত এই গ্রামের মানুষ কথা বলে না শীতে

Reporter Name / ৮০ Time View
Update : রবিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৫

বিশ্বে অদ্ভুত এক গ্রাম আছে, যেখানকার বাসিন্দারা শীত এলেই কথা বলা বন্ধ করে দেয়। তবে এর পেছনের রহস্য কী? আসলে তারা এ সময়কে দেবতাকে তুষ্ট করতে মৌনব্রত পালন করেন। তাই টানা ৪২ দিন কেউ কারও সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলেন না। ইশারার মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে এ সময় তারা যোগাযোগ রাখেন। ভারতের উত্তর অঞ্চলের কিছু এলাকায় এই নিয়ম পালিত হতে দেখা যায়। কিন্তু কেন?

হিমাচল প্রদেশের মানালির কুল্লু জেলার ৯ গ্রামের বাসিন্দারা স্থানীয় দেবতা গৌতম ঋষিকে তুষ্ট করার জন্য মকর সংক্রান্তি (১৪ জানুয়ারি) থেকে ৪২ দিন ধরে নীরবতা পালন করেন। প্রতিবছরের জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ থেকে ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখ পর্যন্ত ওই গ্রামের বাসিন্দারা কেউ কারো সঙ্গে কোনো কথা বলেন না।

অদ্ভূত এই গ্রামের মানুষ কথা বলে না শীতে

চুপ থাকার পাশাপাশি তারা বন্ধ থাকে কৃষিকাজও। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন, প্রতি বছর মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে দেবতা গৌতম ঋষি স্বর্গে দেবতা পরিষদে যোগদান করেন। এজন্য তিনি পৃথিবীর আবাস ত্যাগ করেন ও পরবর্তী ৪২ দিন স্বর্গে থাকেন। এই সময়কালে, তিনি ধ্যান করেন। পৃথিবী থেকে আওয়াজ পেলে তিনি বিরক্ত হতে পারেন, এই বিশ্বাসেই মৌনব্রত পালন করেন গ্রামবাসীরা।

অদ্ভূত এই গ্রামের মানুষ কথা বলে না শীতে

দেবতার ক্রোধ এড়াতে, কুল্লু জেলার উঝি উপত্যকার গোশাল, সোলাং, শানাগ, কোঠি, পালচান, রুয়ার, কুলং, মাঝাচ ও বুরুয়ার বাসিন্দারা প্রতিবছর এই প্রাচীন ঐতিহ্যকে কঠোরভাবে অনুসরণ করে। এমনকি তারা পরবর্তী ৪২ দিনের জন্য টেলিভিশন ও রেডিও সেট বন্ধ করে রাখেন। গ্রামের সবাই মোবাইল ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখেন। দেবতাকে তুষ্ট করতে গ্রামবাসীরা বিনোদনের সব উৎস বন্ধ করে দেয় এ সময়।

অদ্ভূত এই গ্রামের মানুষ কথা বলে না শীতে

সেখানে একটি বহু প্রাচীন মন্দির আছে যেটি মকর সংক্রান্তির দিন মেঝেতে কাদা ছড়িয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর খোলা হয় ৪২ দিন পর। ঋষি গৌতম ছাড়াও বেদব্যাস ও কাঞ্চন নাগের মূর্তিও দেখা যায় মন্দিরে। ওই সময় যদি মন্দিরের মেঝেতে কোন ফুল পড়ে থাকে তাহলে গ্রামবাসীরা তাকে শুভ সংকেত বলে মনে করেন।

অদ্ভূত এই গ্রামের মানুষ কথা বলে না শীতে

তবে যদি কয়লার টুকরো পড়ে থাকে তাহলে গ্রামবাসীরা কোনো দুর্ঘটনার আভাস বলে ধরে নেন। তবে শীতকালে এসব গ্রামের মানুষ কথা না বললেও হেডফোনে গান শোনেন, বেড়াতে যান, বাড়ির কাজ করেন। কোনো পর্যটককেও তারা এ সময় কথা বলার সুযোগ দেন না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category