• রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

ড.ইউনূসের উচিৎ কথায় ভারতের আঁতে ঘা 

Reporter Name / ৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫

– রিন্টু আনোয়ার
উই আর দ্য অনলি গার্ডিয়ান অব দ্য ওসান ফর অল দিস রিজিওন- ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ কথায় না চটে পারেনি ভারত। বৃহৎ এ দেশটির চোখে চোখ রেখে এমন কথা কেউ কখনো বলবে বা বলতে পারবে, তা ভাবনাতীত।  ভারত একে থ্রেট হিসেবে নিয়েছে।  কূটনীতির দাবা খেলায় যেখানে ভারত চাওয়া মাত্রই বাংলাদেশ তার মন্ত্রী ভারতের জন্য উৎসর্গ করে দিতেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো দেশ সফরে যেতেন ভারতের অনুমতি নিয়ে। সেখানে ভারতকে নিয়ে এমন কথা!
চীন সফরের সময় দেশটির রাষ্ট্রপ্রধানসহ নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাক্ষাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি ভৌগোলিক নানা ইস্যুতে কিছু কথা বলেছেন ড. ইউনূস। সেখানে ভারতের ৭টি রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা তুলে ধরেন ড. ইউনূস। ইংরেজিতে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে ল্যান্ডলকড (স্থলবেষ্টিত) অঞ্চল। সমুদ্রের কাছে পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই তাদের। এই অঞ্চলের জন্য আমরাই সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। পুরো বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশকে চমৎকারভাবে রিপ্রেজেন্ট করেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে, বাংলাদেশ আকারে ছোট হতে পারে, গুরুত্বে অপরিসীম। একজন রাষ্ট্রনায়কের বক্তব্যে যে প্রফেশনালিজম-কূটনৈতিক চাল থাকা দরকার এর সবই ছিল ড. ইউনূসের মধ্যে।
সপ্তাহ কয়েক আগে তিনি কুতুপালং-এ জাতিসংঘ মহাসচিবকে সাথে নিয়ে ১ লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতার করেছেন। তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনেছেন। তাদের কথা দিয়েছেন, পরবর্তী ঈদে তারা নিজ দেশে গিয়ে বাবা-মা, দাদা-দাদীর কবর যেয়ারত করবে। গত ৭-৮ মাসে তার হাত ধরে বাংলাদেশ ৬২ হাজার কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেছে। রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-এর শুরুতে যেই রিজার্ভ ছিল ২০ এর নীচে, সেই রিজার্ভ এখন ২৫.৪৪ বিলিয়ন ডলার। এবারের পবিত্র রমজানটা এদেশের গরীব-দুঃখী মানুষের জন্য স্বপ্নের মত ছিল। চাল-তেলসহ কয়েকটি পন্য বাদে বেশিরভাগ  দ্রব্যমূল্যে তিনি লাগাম টেনেছেন শক্ত হাতে। এর মাঝেই চীন সফর এবং ভারত প্রসঙ্গ। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনুসের বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ভারতের রাজনৈতিক মহলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে ড. ইউনূসের বক্তব্যটি।
এ নিয়ে বয়ান-ব্যাখ্যা চলছে আচ্ছা মতো। ভারতের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে রাজনীতিক মহল এবং সংবাদমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তারা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে রীতিমতো হতভম্ব। ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের কেউ এটিকে হুমকি হিসেবে দেখছেন, কেউবা এমন বক্তব্যে অবাক হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ভারতের সাতটি রাজ্য ল্যান্ডলকড হওয়ার তাৎপর্য আসলে কী?’ তিনি ড. ইউনূসের বক্তব্য শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের তথাকথিত গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান সর্বদাই ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ ছিল।’বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি দেশটির সংবাদ মাধ্যম এএনআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টার এই মন্তব্যকে ‘অবাক করা’ বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ড. ইউনূসের এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার কোনো অধিকারই নেই।’সতর্ক করে বীণা সিক্রি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ উত্তর-পূর্ব ভারতকে সংযোগের অধিকার দিতে আগ্রহী না হলে বিনিময়ে তারা নদী তীরবর্তী অধিকার আশা করতে পারে না।’
ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ প্রফুল্ল বকশি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে চরম হুমকি হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভারত বাংলাদেশ তৈরি করেছে এবং এটি করার সময় কোনও মানচিত্রগত সুবিধা গ্রহণ করেনি।’বকশি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রুট শিলিগুড়ি করিডোরকে কাজে লাগিয়ে ভারতকে গলা টিপে মারার উপায় নিয়ে আলোচনা করছে। ক্ষেদ-ক্ষোভ ভারতীয় প্রচারমাধ্যমেও। চীন ইউনূসকে হায়ার করে নিয়ে এসব কথা বলিয়েছে, ইউনূস উত্তরপূর্ব ভারতকে উস্কানি দিতে চীনকে আমন্ত্রণ করছেন-  এমন প্রচারনাও বাদ নেই। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা এই মন্তব্যকে চিহ্নিত করেছেন ‘আক্রমনাত্বক’ বলে। কংগ্রেসের পবন খেরা বলেছেন, ‘বিপজ্জনক’। ত্রিপুরার মহারাজা ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল তিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য তো বাংলাদেশ থেকে চট্টগ্রামকে আলাদা করে দেয়ার হুঁশিয়ারিই দিয়ে বসেছেন। ইউনূসের নিন্দার একটা প্রতিযোগিতার হাট বসেছে ভারতে। যে যা পারছেন বলছেন। ভারতের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেস দাবি করেছে, ভারতকে ঘেরাও করতে বাংলাদেশ আদতে চীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।  ভারতের নিরাপত্তার জন্য তা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ত্রিপুরার রাজনৈতিক দল তিপ্রামোথার নেতা প্রদ্যোৎমানিক্য দিয়ে বসেছেন আজগুবি তথ্য। তিনি বলেন,  ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দরটি ছেড়ে দেয়া ভারতের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। এক সময় চট্টগ্রাম শাসন করত আদিবাসীরা। পাহাড়ি জনগণ ভারতের অংশ হতে চেয়েছিল। এখন আদিবাসীদের সমর্থন নিয়ে সমুদ্রে যাওয়ার পথ তৈরি করার সময় এসেছে ভারতের। এর বিপরীতে ভারত প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের বক্তব্য মূলত যত না মন্তব্য তার চেয়ে বেশি তথ্য। উত্তর-পূর্বভারতের সাতটি রাজ্য যে স্থলবেষ্টিত, তা কে না জানে! কিন্তু, ভারত এ তথ্য শুনতেও নারাজ। তাই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠা। তাদের কাছে এই বক্তব্য আপত্তিকর এবং তীব্র নিন্দনীয়। এ তথ্যের মাঝে ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের কারণে ভারতের যে দুর্বলতা, সেটির কথা মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে বলে ভাবনা তাদের। এই দুর্বলতাকে এড়াতে চিকেনস নেক করিডোরের নিচে এবং আশেপাশে মজবুত রেল ও সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার দাবি জানান আসামের মুখ্যমন্ত্রী। ড. ইউনুসের বক্তব্য ইস্যুতে ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের মিডিয়া এবং প্রচারবিভাগের প্রধান পবনখেরা। তিনি বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি এতটাই করুণ অবস্থায় পৌঁছেছে, যে দেশটির সৃষ্টিতে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, সেই দেশটিও আজ আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ মোকাবিলায় এশিয়ার অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন এ অঞ্চলে আলাদা জোট করতে চায়। আরেক অর্থনৈতিক পরাশক্তি জাপান এবং বড় অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে জোট করার ঘোষণা দেয়ার পর ভাবনা চলছে আরেক বড় অর্থনীতি ভারতকে নিয়েও। আমেরিকার শুল্ক নীতিকে ঠেকাতে আঞ্চলিক স্তরে বাণিজ্যিক চুক্তিতে যাওয়ার কথা চিন্তা করছে চীন। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ৭৫ বছর উপলক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখে সম্পর্ক আরও গভীর করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর যৌথ সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে দু’দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতার প্রতি সমর্থনের কথা দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বহুমুখী বিশ্বরাজনীতিতে বাংলাদেশকে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে রাখার কঠিন পরীক্ষা এখন ড.ইউনূসের সামনে। যুক্তরাষ্ট্রকে না চটিয়ে চীন সফর করে আসা, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রাপ্তি যোগ করার দূরদর্শিতা দেখিয়েছেন। গ্লোবালাইজেশনে খেলতে হচ্ছে তাকে।
এশীয় অঞ্চলে মিত্র বাড়াতে চাচ্ছে চীন। এটি ভারতের জন্য শঙ্কার। দেশটির চারদিকেই এখন প্রতিপক্ষ। তারওপর ভারতীয় পণ্যের উপরেও বাড়তি শুল্ক চাপানো হবে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ভারত-চীন সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা, সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে জোর দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। ড.ইউনুসের চীন সফরকে ঘিরে সন্দেহ-অবিশ্বাস সৃষ্টির চেষ্টা চলেছে। শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অতিভারত নির্ভরতার অভিযোগ থাকলেও তাদের টানা চার মেয়াদে চীনের সঙ্গে সখ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন সেই সম্পর্কে একটা ছেদ ফেলে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের বিগত বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সৌহার্দ্য দৃশ্যমান হলেও এ ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি এখনো অস্পষ্ট। একদিকে ভারতের সঙ্গে চীনের আঞ্চলিক আধিপত্যের প্রশ্নে বৈরিতা চলছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বৈরিতা বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর আরও ঘনীভূত হয়েছে। এ কারণে ড. ইউনূসের চীন সফর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কী প্রভাব রাখবে, তা নিয়ে গুঞ্জন ঘুরছে। সব আলোচনা ছাপিয়ে এ সফর থেকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কূটনীতি-রাজনীতি-অর্থনীতি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম বা রামকৃষ্ণ মিশন নয়।  এতে যার যার স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা ব্যাপক। চীন-ভারতের মতো বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এরপরও বিগত সরকার ভারতের অনুমতি ছাড়া এক পাও ফেলতে পারতো না। সেই লজ্জার পর্ব শেষে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন দেশ। তার সফরে চীনের প্রতিশ্রুতি মুলত: ২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এবং আর্থিক সহায়তা, ২০২৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করা। এটি বাংলাদেশকে তার এলডিসি থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের পরেও চীনের বাজারে সুবিধা দেবে। চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশ্চিত করেছেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে। তারা বাংলাদেশের মোংলা পোর্ট আধুনিকীকরণ এবং দাশেরকান্দি স্যুয়েজ প্রকল্পে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া চীন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য চারটি মহাসাগরগামী জাহাজ কেনার জন্যও অর্থায়ন করবে। তিস্তার সমস্যা সমাধানে ভুমিকা নেবে। ড. ইউনূসের অনুরোধে বাংলাদেশে প্রস্তুত পোশাক, বৈদ্যুতিক যান, উচ্চপ্রযুক্তির ইলেকট্রনিকস এবং সোলার প্যানেল শিল্প স্থানান্তরে সহায়তা দেবে চীন। চায়না এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক এ উদ্যোগে বিশেষ সহায়তা দেবে। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও জোরদার হবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরও বৃত্তি দেবে চীন।
ড. ইউনুসকে চীন যে সম্মান দিয়েছে, তা বিশ্ববাসী দেখেছে। এশীয় অঞ্চলের জন্য এটি একটি বার্তা। ভারতের জন্য তা বেশি প্রাসঙ্গিক। এই প্রাসঙ্গিকতার মাঝেই সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এক বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কে সব অস্বস্তি দূর হয়ে যাবে না। কিন্তু এটি দুই পক্ষকে ভবিষ্যতে গঠনমূলক আলোচনার জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা এবং উ‌ৎসাহ দেবে। ভারত থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি দেওয়া ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সব সময় ভারতকে অনুরোধ করেছে তাকে বিরত করার জন্য। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ভারত থেকে যে অপপ্রচারণা চালানো হয়, সেটির বিষয়ক সব সময় প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ। এই প্রেক্ষাপটে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে। তবে,সাবেক এক কূটনৈতিক মনে করেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারত এসিমেট্রিক পাওয়ার। ফলে তাদের আচার-আচরণ বা ভাবপ্রকাশের মধ্যে পার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক।’
বিমসটেক এর পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে দায়িত্ব পেয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। দায়িত্বের সঙ্গে চলে আসে দায় এবং চ্যালেঞ্জও।  ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’-তত্বের হেরফের হয়ে যাচ্ছে ড. ইউনূসকে ঘিরে।ড. ইউনূসকে তা পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতকাবাহী হয়েই। চীনে ও থাইল্যান্ডে সফরে সেটার ড্রেস রিহার্সাল হয়ে গেছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের আলোচনা এবং সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিভিন্ন শব্দ ও বাক্যেও এর রেশ রয়েছে।
লেখকঃ সাংবাদিক ও কলামিস্ট


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category