• বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৫ অপরাহ্ন

পুরান বেকারের সঙ্গে নতুন বেকার যোগ: চ্যালেঞ্জে অর্থনীতি-সমাজনীতি 

Reporter Name / ৭৪ Time View
Update : বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫

-রিন্টু আনোয়ার

দেশের চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি,বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, বিনিয়োগের স্থবিরতা এবং শ্রমবাজারে অস্থিরতাসহ বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতাগুলোকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মূল্যায়ন শুধু আর্থিক নীতি নির্ধারণে নয়, বরং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো ও কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্যও অপরিহার্য। বর্তমান অর্থনৈতিক পটভূমিতে বিনিয়োগে এমন অনেক জটিল সমস্যা বিদ্যমান, যা সমন্বিত ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাধান করা জরুরি। কারণ বিনিয়োগে কেবল স্থবিরতা নয়, বিনিয়োগ বা পুঁজি যা আছে তা রক্ষা করাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। না দেশি, না বিদেশি- সব বিনিয়োগেই খরা। তা গত মাস কয়েক ধরে নয়; বছর তিনেক ধরেই। অনেক তথ্যই লুকিয়ে রেখে ছড়ানো হয়েছে মিথ্যা তথ্য। শোনানো হয়েছে উন্নয়নের গল্প। বড় বড় ব্যবসায়ীদের ডেকে নিয়ে বলানো হয়েছে-দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়ছে। হাজারে-হাজারে কাতারে কাতারে কর্মসংস্থান হচ্ছে। বাংলাদেশ হয়ে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া- কানাডা। শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তিনি না থাকলে বাংলাদেশ থাকবে না। তাই ব্যবসায়ীরা তাকেই চান। মরনের পরও তাকেই চান। তার সাথেই থাকবেন। ভেতরে ভেতরে আসলে দেশকে ঘুন পোকায় খেয়ে সাফা করার অবস্থা।
এর পাকাপোক্ত আয়োজনটা করা হয়েছে গেল বছরের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেপরে। এরপর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে বিধলো আরেক পেরেক। ৫ আগস্টে খেল খতম। ঘুন পোকারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেঁচেছে। কিন্তু, দেশকে ফেলে গেছে গহবরে। তথ্য আর লুকিয়ে রাখার অবস্থা নেই। এ সরকারের মধ্যে তথ্য লুকানোর মানসিকতা নেই। বল-ভরসা-সাহস যোগাচ্ছে, আবার দেশের গুরুচরণ দশার কথাও জানাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও অবস্থা জানান দেয়ার একটা সংস্কার এসেছে। বিগত আমলের সময় সরকারের বন্দনা না করে মাঝেমধ্যে সমালোচনা করাও শিখেছে। তা না করে কোনো উপায় নেই। প্রায়ই ছোট-বড় কোনো না কোনো মিল-কারখানা, প্রতিষ্ঠান বন্ধের কুখবর গোপন রাখার অবস্থাও নেই। ছোটখাট খবরগুলো গণমাধ্যমে না এলেও বড়গুলোতে বন্ধের ঘোষণা দিয়ে অফিস বা কারখানার গেটে নোটিশ টাঙিয়ে দেয়া হচ্ছে। দাফতরিক ভাষায় জানিয়ে  প্রায় একই: ‘অনিবার্য কারণে আগামীকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানা বন্ধ থাকব ‘।
এর তাৎক্ষণিক অনিবার্য জের কর্মী ছাঁটাই, কর্মী কমানো। বেকারত্বের মাঝে এ নতুন বেকারত্বে বুক চাপড়ানো বিলাপ-আহাজারি। তাদের পরিবারের সদস্যদের বদদোয়া। ওপরওয়ালার কাছে ফরিয়াদ। এসব অভিশাপ যাচ্ছে কার আমলনামায়? দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত করে লুটেরারা পগারপাড় হয়েছে। অন্তর্বতী সরকারের ঘাড়ে সেই বোঝা। বিগত সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে পার পাওয়ার অবস্থা নেই তাদের। নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে পারছে না। যা ছিল তাও রক্ষা করতে পারছে না। আবার লুটের টাকা ফেরতও আনতে পারছে না। এর ফলে বেকারত্ব বাড়ছে শঙ্কাজনক পর্যায়ে।  গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকেই দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬০ হাজার। এটি সরকারি হিসাব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস প্রকাশিত ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে মোট বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৬০ হাজার। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে পুরুষ বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯০ হাজার, আর নারী বেকার ৮ লাখ ৭০ হাজার। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এরমধ্যে পুরুষ বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৮১ ও নারী বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের একই সময়ে এ হার ছিল ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ, যেখানে পুরুষ ছিল ৩ দশমিক ৪৬ ও নারী ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। প্রকৃত হিসাব আরো বেশি।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের হিসাবে দেশে প্রচ্ছন্ন বেকারের সংখ্যা কয়েক কোটি। বেকারের গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা ঠিক না হওয়ায় বেকারত্বের প্রকৃত জরিপ বা হিসাব বের করা সম্ভব নয়। দেশে বেকার-নিরাকার নিয়ে গোলমাল আছে। শিক্ষা শেষে চাকরি না পেয়ে টিউশন করা বা কোনো প্রশিক্ষণ নিয়ে সেই দৃষ্টে কাজ না পেয়ে শীতে সিদ্ধ ডিম বা গরমে ডাব বিক্রি করা ব্যক্তিদের বেকার ধরা হয় না। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলওর সংজ্ঞা অনুযায়ী, ৩০ দিন ধরে কাজপ্রত্যাশী একজন মানুষ শেষের সাত দিনে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ না পেলেই কেবল বেকার ধরা হয়। বিবিএসও এ সংজ্ঞা ব্যবহার করে। সেই হিসেবে দেশে বেকার নেই বলার মতো অবস্থা। এ বেশুমার বেকারদের সিংহভাগের কর্মসংস্থান হয় বেসরকারি সেক্টরে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের হিসাবে দেশে মোট কর্মসংস্থানে সরকারি চাকরির অংশীদারি মাত্র ৩.৮ শতাংশ। বেসরকারিতে কর্মসংস্থান হয় ১৪.২ শতাংশ। প্রায় ৬১ শতাংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে ব্যক্তি উদ্যোগের মাধ্যমে। বাকি ২১ শতাংশ অন্যান্য ক্ষেত্রে নিয়োজিত।
সরকার পরিবর্তনের পর এ বাড়ির বাদ্য গত কয়েক মাসে তৈরি পোশাকসহ কয়েকটি খাতে কী যন্ত্রণা তৈরি করেছে তা সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিক দুই ভুক্তভোগীরা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছেন। অন্য কারো কারো পক্ষে ধারনারও বাইরে শ্রমিক-মালিক উভয়ই কী যাতনায় ভুগছেন, তা উপলব্ধি করা। জ্বালানি সংকট, গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধি, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদ, কাঁচামাল আমদানিতে এলসি সমস্যায় এক ভোগান্তি। বাস্তবতার নিরিখে শ্রমিক মজুরিও বাড়াতে হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাড়ায় বেড়েছে প্রতিযোগিতাও। এসব সমস্যার যোগফলে গত এক বছরে তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার ও টেক্সটাইলশিল্পের ১৪০টি কারখানা বন্ধের সমান্তরালে স্বাভাবিকভাবেই এক লাখের কাছাকাছি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। কেবল বেক্সিমকো গ্রুপেরই ১৫টি পোশাক কারখানা বন্ধ হওয়ায় ছাঁটাইর শিকার প্রায় ৫০ হাজার কর্মী। অন্যান্য কলকারখানাসহ গোটা সেক্টরে নমুনা খারাপ। সামনে আরো কী অপেক্ষা করছে,মালিকদের ভাবনায় অকুলান। কারখানা চালু রাখা, অর্ডার নেওয়া, কাঁচামাল কেনা, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অন্ধকার দেখছেন তারা। এখনো বেকার না হওয়া শ্রমিকরা আতঙ্কে। আর এরইমধ্যে বেকার হয়ে যাওয়াদের বাসা ভাড়া দেয়ার অবস্থা নেই। হাটবাজার বন্ধ। এর প্রভাব  অর্থনীতিতে পড়ছে। লোকালয়েও পড়তে শুরু করেছে। বেকার বলে তারা ঘরে বসেও থাকছে না। চলে যাচ্ছেন মিল-ফ্যাক্টরির কাছাকাছি সহকর্মীদের কাছে বুদ্ধি-পরামর্শ-সহযোগিতা নিতে। সহযোগিতা না মিললেও উস্কানি মিলছে সেখানে। যার জেরে সমাজে অস্থিরতায় টোকা পড়ছে। নানা বাজে কাজে জড়িয়ে সমাজে তারা  আপদের মতো ভর করছে।
একটি চলমান প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে কতো সর্বনাশের সংযোগ তা বুঝতে অর্থনীতিবিদ হওয়া জরুরি নয়। স্বাভাবিক বিবেকবান যে কারো পক্ষেই তা উপলব্ধি করা সম্ভব। বিনিয়োগ-ব্যবসাকে রাজনীতির বাইরে রাখলে আজকের এ অবস্থা হয় না। বিনিয়োগ থমকে যাওয়া, নতুন করে বেকারত্ব ভর করা শুধু অর্থনীতি পরিচালনার বিষয় নয়। এখানে পুঁজির নিশ্চয়তার বিষয় রয়েছে।  সরকারের একার পক্ষে সেই সেই নিশ্চয়তা সম্ভব নয়। কর্মহীন অর্থনীতি বেকারত্ব উস্কে দেয়। তরুণদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ কর্মসংস্থান, শিক্ষা বা প্রশিক্ষণে নেই। দীর্ঘমেয়াদি বেকারদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীদের সংখ্যাও বাড়ছে। এই প্রবণতাগুলো দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে সমাজজুড়ে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। সেখানে কর্মসংস্থানের ভরসা  বেসরকারি সেক্টরে নতুন করে বেকার  তৈরি হওয়া উদ্বেগের ওপর বাড়তি উদ্বেগ। বেকার বা চাকরিহারাদের মধ্যে শেয়ারবাজারে মাথা ঢোকানোর একটা প্রবণতা থাকে। যতসামান্য সঞ্চয় এবং ধারকর্জে বিনিয়োগ করে সেখান থেকে কিছু আয় রোজগারের অবস্থাও নেই। বরং রয়েছে পুঁজি-পাট্টা খোয়ানোর যতো ব্যবস্থা। শেয়ারাবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজারের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে কিছুই করতে পারেনি। পারেনি ভালো কোন প্রতিষ্ঠানকে বাজারে ফেরাতে। তারওপর কিছু অমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে বাজারে অস্থিরতা ছড়ানো হচ্ছে। ফলে বেকারত্বের আরেক হাতছানি সেখানে। সরকার চেষ্টা করছে না, বিষয়টা এমনও নয়। চেষ্টায় কুলাচ্ছে না।
বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে- তা বুঝতে অর্থনীতিবিদ হওয়া লাগে না। আর বিনিয়োগ বলতে মূলত বেসরকারি খাত। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়ে বেসরকারি বিনিয়োগকারী তথা কর্মসংস্থান দেয়া ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীদের ফেলা হয়েছে বাড়তি যন্ত্রণায়। নিজ নিজ জায়গায় তাদেরই বেকার হওয়ার অবস্থা। এমনিতেই ডলার ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটসহ নানা প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে শিল্পোৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় নতুন বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে আস্থা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। মাঠে যে বিনিয়োগ আছে তা রক্ষারই গ্যারান্টি নেই। এই নিদারুণ চাপে কমে গেছে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলা। বেসরকারি ঋণে চলছে ধীরগতি, বিনিয়োগে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ঋণ ফেরত দেওয়ার সক্ষমতাও হারিয়ে গেছে অনেকের। বিকল্প হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগের লক্ষণও নেই। বিদেশি বিনিয়োগ এলে ডলার মেলে। কর্মসংস্থানও হয়। স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূসও তার ইমেজ খাটিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ ধরতে চাচ্ছেন। তার উপদেষ্টারাও খাটছেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত উল্লেখে করবার মতো সুখবর নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গেছে। ভরসা কেবল রেমিটেন্স। গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্স-রিজার্ভ বেড়েছে । কিন্তু, তা কর্মসংস্থানে ম্যাটার করে না। অন্যদিকে বেসরকারি বিনিয়োগের স্থবিরতা দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থান খাতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উচ্চ সুদের হার, অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের অভাব বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় বাধা। বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগ নীতি সংস্কার, কর প্রশাসন সহজীকরণ এবং আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন। অর্থনৈতিক ইস্যুগুলোতে সমন্বয়ের অভাব নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এটি এখনই এমন একটি সময়, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় কার্যকর ও ব্যাপক হস্তক্ষেপ দেখাতে হবে।

লেখক ঃ সাংবাদিক ও কলামিস্ট
rintu108@gmail.com


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category