কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের শেষ আটের প্রথম লেগে এলএএফসির কাছে হেরেই বসেছিল লিওনেল মেসির ইন্টার মিয়ামি। ফলে ফিরতি লেগের ম্যাচটা জিতলেই হতো না, জিততে হতো নিদেনপক্ষে দুটো গোল করে।
কিন্তু তা করবে কী! মেসির দল প্রথমে গোল হজমই করে বসে। ২-০ গোলে পিছিয়ে তখন পরিস্থিতিটা দাঁড়িয়েছিল নিদেনপক্ষে তিন গোল করতেই হবে। তখনই লিওনেল মেসি দেখালেন তার জাদু। দুটো গোল নিজে করলেন, একটা করালেন সতীর্থকে দিয়ে। তাতেই ৩-১ আর সামগ্রিক লড়াইয়ে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মিয়ামি চলে যায় কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের শেষ চারে।
খেলার শুরুতেই এলএএফসির অ্যারন লং গোল করে বসেন। ১০ মিনিটে তার করা এই গোলে মায়ামি অ্যাগ্রিগেটে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। তখন মনে হচ্ছিল, মায়ামির পক্ষে ফিরে আসা বুঝি কঠিনই হবে। তবে মেসি আজ ছিলেন দারুণ ছন্দে, মিয়ামির কাজটা সহজ হয়ে গেল শেষতক সে কারণেই।
একটা সময়ে ইন্টার মায়ামি ফ্রি-কিক পায়। রায়ান হলিংসহেড ফাউল করায় তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। তখন এলএএফসি রক্ষণের প্রস্তুতি শেষ হওয়ার আগেই মেসি দ্রুত ফ্রি-কিক নিয়ে গোল করে বসেন। কিন্তু রেফারি গোলটাকে বৈধতা দেননি, কারণ হলুদ কার্ডের পর রেফারির বাঁশি বাজানোর পরেই খেলা শুরু হতে হয়। এই সিদ্ধান্তে ইন্টার মায়ামির খেলোয়াড়রা ক্ষুব্ধ হয়।
তবে মেসি একটু পর গোল পেলেন ঠিকই। ডিফেন্ডারদের ভিড়ের মধ্য থেকে ডিফ্লেক্টেড একটি বল পেয়ে যান, সেটা তিনি দারুণ এক শটে পাঠান জালে। তাতে ম্যাচে সমতা ফেরে।
তবে সামগ্রিক লড়াইয়ে সমতা ফেরাতে আরও একটা গোল প্রয়োজন ছিল। সেটা ফ্লোরিডার দলটা পায় ৬১তম মিনিটে। ফেদেরিকো রেদন্দোর ক্রস থেকে নোয়া অ্যালেন হেড করে গোল করেন। হুগো লরিস কিছুই করতে পারেননি।
এরপর লুইস সুয়ারেজও যোগ দিয়েছিলেন এ উৎসবে। তিনি একটি হেড করে গোল করলেও তা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ম্যাচে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দেখা যায়। উভয় দলই বেশ কয়েকবার রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল।
শেষে এলএএফসি-র ডিফেন্ডার মারলনের এক ভুলে বল হাতে লাগে। তখন হুগো লরিস বল ধরতে ছুটে আসছিলেন। সেই মুহূর্তে রেফারি পেনাল্টি দেন। সবাই জানত, কে শট নেবেন। মেসিই এগিয়ে আসেন।
২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো আবারো লরিস বনাম মেসি। এবং এবারও জয়ী হন মেসি। ৮৪তম মিনিটে নেওয়া এই পেনাল্টিতে ইন্টার মায়ামি ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে এলএএফসি-র ডেনিস বুয়াঙ্গা সুযোগ পেলেও গোল করতে পারেননি। গোলকিপার অস্কার উস্তারি দুর্দান্ত সেভ করেন। ফলে শেষ হাসিটা মেসির দলই হাসে।
এই জয়ের পর তারা সেমিফাইনালে উঠল। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হতে পারে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস অথবা পুমাস।