জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ফরিদপুর অঞ্চলের সমন্বয়ক রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদার ও হাবিবুর রহমান।
সোমবার গ্রেপ্তারের পর তাঁদের কাছ থেকে তিনটি স্মার্টফোন ও দুটি ফিচার ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) গোয়েন্দা তথ্য ও সহযোগিতায় ডিবি লালবাগ বিভাগ কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আমির হোসাইন সম্পর্কে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট পেয়েছিলেন আমির হোসাইন। হুজি নেতা ও ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া মাওলানা আবদুর রউফের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য ২০০২ সালে ময়মনসিংহে যান তিনি। ময়মনসিংহের ভালুকার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার পাশাপাশি হুজি সদস্য সামরিক ও আন–আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ২০০৩ সালে বাবা, মামা, ভগ্নিপতিসহ মোট ১৮ জন সদস্য হুজি নেতা মাওলানা আবদুর রউফের সঙ্গে বৈঠকের সময় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। পরে ছাড়া পান। আমির হোসাইন একটি জীবনবিমা কোম্পানির ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য তিনি তিন সদস্যকে বান্দরবানে কুকি–চিনের সন্ত্রাসীদের কাছে পাঠিয়েছেন।
গ্রেপ্তার মশিউর রহমান সম্পর্কে ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, তিনি প্রথমে ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সদস্য ছিলেন। ২০০২-০৩ সালে ময়মনসিংহে হুজি নেতা আবদুর রউফের মাদ্রাসায় সামরিক ও আন–আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৩ সালে হুজি নেতাদের সঙ্গে গ্রেনেডসহ ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে ৪ বছর সাজা খাটেন। পাহাড়ি বৈরী পরিবেশে কমান্ডো হিসেবে টিকে থাকা, পিটি-প্যারেড শেখা, আন–আর্মড কমব্যাট, অ্যাসল্ট রাইফেল চালানো, বোমা তৈরি এবং এ–সংক্রান্ত বিষয়ে বান্দরবানে কুকি–চিনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন। গ্রেপ্তার হাবিবুর রহমান দলের নতুন সদস্য। তিনি প্রশিক্ষণ নিতে বান্দরবানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সম্পর্কে হারুন অর রশীদ বলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি), আনসার আল ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) মুক্তিপ্রাপ্ত এবং পলাতক বেশ কিছু সদস্য মিলে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া গঠন করেন।