-রিন্টু আনোয়ার
ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী শাসক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ‘ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্য’ প্রকাশ করছে বলে অভিযোগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘দেশের রাজনীতিতে এ দলের এখন ‘‘কোনো জায়গা’’ নেই।’
তার এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অধ্যাপক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে চলে যান দলটির প্রধান ও টানা ১৫ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনা।
‘নিজেদের স্বার্থসিদ্বির জন্য তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ (দমন–পীড়ন) করেছে, তারা রাজনৈতিক দলকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছে,’ বলেন ড. ইউনূস। তিনি আরও বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিস্ট দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়।’
শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পরিচালনা এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোয় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ করেছেন রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীরা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর দলকে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে দূরে সরিয়ে রাখা, সংস্কার, নাকি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা উচিত, সে বিষয়ে বিতর্ক চলছে।
তারই ফলশ্রুতিতে সম্ভববত শুধু আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম নয়, তাদের মাধ্যমে সুবিধাভোগী আরও ১০টি দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে এসব দলের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ তুলেছেন রিটকারীরা।
অথচ,আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট থেকে কেন সরে এলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত-সারজিসরা? সমান্তরাল প্রশ্ন-সরবেনই যদি তাহলে কেনই বা করেছিলেন রিট আবেদনটি? দুই প্রশ্নের একটিরও পরিস্কার জবাব নেই। সম্পুরক প্রশ্ন হচ্ছে-কারো পরামর্শ ছাড়াই কি করেছিলেন রিটটি? তা হলে আবেদন প্রত্যাহার করলেন কার পরামর্শে? তাদের কি তবে, ময়মুরুব্বি বদলে গেছে? অথবা এক মুরুব্বি মহল থেকেই আগে-পরে দুই বুদ্ধি এসেছে?
যদিও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ প্রতিহিংসার অংশ, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র, একটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন শ্রেণি পেশার জনগণ দ্বারা গঠিত হয়। তাই দল নিষিদ্ধ গ্রহণযোগ্য নয়।
কেবল ১১টি দলের রাজনীতি নিষিদ্ধই চাননি তারা। আওয়ামী লীগ আমলের বিতর্কিত বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা না দেয়ার কথাও ছিল রিট আবেদনে। এতে বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। এসব নির্বাচনের গেজেট কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয় সেই রিটটিও না চালানোর কথা জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী। প্রথম রিটে আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিট আবেদনে নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অভিযোগ আনা হয় দলগুলোর বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাকি দলগুলো হলো জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বিকল্পধারা বাংলাদেশ, তরীকত ফেডারেশন, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণতন্ত্রী দল, মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী (বড়ুয়া) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল।
অবাক ব্যাপার হচ্ছে, আওয়ামী লীগের ধারে-কাছেও না থাকা কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবিকে টার্গেট করা হয়েছে। আরেকদিকে আওয়ামী লীগের একান্ত অনুগত রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টির নাম নেই। কিন্তু, বাংলাদেশে মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী (বড়ুয়া) নামে কোনো রাজনৈতিক দল না থাকলেও এই নামটি রয়েছে আবেদনে। সম্ভবত দিলীপ বড়ুয়ার সাম্যবাদী দল (এমএল) কে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এখানে ড্রাফ্টিংয়ে সংশ্লিষ্টরা ১৪ দলীয় জোটের শরীকদের নাম ঠিকভাবে না জানার একটি নমুনা স্পষ্ট। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরীকদের ঠিকভাবে না চেনার আলামত বিদ্যমান। নইলে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির নাম আসে না।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের পর ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সারজিস আলম লেখেন, ‘দুটি রিট করেছি। আওয়ামী লীগের বিগত তিনটি নির্বাচনকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত সুবিধাগুলো কেনো ফিরিয়ে দেবে না সে বিষয়ে প্রথম রিট। এই মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত কেন তাদেরকে পলিটিক্যাল সকল অ্যাক্টিভিটি থেকে বিরত রাখা হবে না সে বিষয়ে দ্বিতীয় রিট।’ দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কিংবা নিবন্ধন নিষিদ্ধের কোনো কথা রিটে নেই বলেও পোস্টে জানান সারজিস আলম। এর আগে, এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, কোনো রিটই দায়ের করা হয়নি। প্রক্রিয়া করা হয়েছে মাত্র। পরে রিটকারীদের আইনজীবী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিমও সাংবাদিকদের রিট দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করেন। জানান, রিটে সরাসরি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাওয়া হয়নি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত:বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে। ওই আল্টিমেটামের পরই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে সরকার। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন আগস্টে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। ক্ষমতা গ্রহণের পর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার।
মোট কথা এমন ওলটপালট কাণ্ড রাজনৈতিক সচেতনদের একটা ঘোরের মধ্য ফেলেছে। জাগাচ্ছে শঙ্কাও। আর প্রশ্ন তো ঘুরছেই। স্পষ্ট জবাব না পেলেও দেশ যে এখনো গৃহবিবাদমুক্ত হয়নি, তা ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। তা ছিল মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীনের পূর্বাপরেও। নব্বইর গণআন্দোলনের আগেপরেও। সেই ছাপ এবারও। অবশ্য একই ঘটনার একাধিক ব্যাখ্যা এখানে বেশ চলে। বিজয়ী আর পরাজিতদের ব্যাখ্যা ভিন্ন হয়। আর ইতিহাসটা বিজয়ীরাই লেখে। ঘটনা যা-ই ঘটুক, ক্ষমতার পালাবদল হলে ইতিহাসের বয়ান পাল্টে যায়। এক সময় আগেই সত্যটাই মিথ্যা হয়ে যায়। সত্যটা হয়ে যায় মিথ্যাটা হয়ে যায় সত্য।
এই বাস্তবতার মাঝেও রাজনীতিকে আদালতে টেনে নেয়ার সংস্কৃতি বন্ধের একটি প্রত্যাশা মানুষের। তা যেন হয়েও হচ্ছে না। এবারের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে একটা বড় ধরনের ওলট-পালট হয়েছে। অনেক বছরের অব্যবস্থাপনা ও লুণ্ঠনের ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তলানিতে। মূল্যস্ফীতির আঘাতে মানুষ জেরবার। এ সময় নানান গোষ্ঠী নানান বায়না বা আবদার নিয়ে মাঠ গরম করছে। এর মাঝে বিতাড়িত-পরাজিত দলকে নিষিদ্ধ করার দাবিও একটি। এক পর্যায়ে দাবিনামাটি ওই বিতাড়িত দলের সহযোগী-সুবিধাভোগী দলের দিকেও যায়। আদালত মাড়িয়ে তা আবার রাজথে ফিরে আসে। হামলা হয় জাতীয় পার্টির কাকরাইল কার্যালয়ে। একদিকে ‘রাষ্ট্র সংস্কারের’ মাধ্যমে ২০২৪-পূর্ববর্তী রাষ্ট্রব্যবস্থা ও রাজনীতির সঙ্গে ছেদ ঘটিয়ে নতুন করে শুরু করার আকাঙ্ক্ষা ও অঙ্গীকার; আরেকদিকে, পুরোনো কাঠামোকে রূপ দেয়ার চেষ্টা।
ক্ষমতাচ্যুতরা সহজেই হাল ছেড়ে দেবেন মনে করা যায় না। তাদের সহযোগীরা নানান কথা বলে মাঠে ঠিকে থাকতে চাইবে। ক্ষমতাচ্যুতদের অনুগত একটি গোষ্ঠী আছে। যা আরও ঝড়-ঝঞ্ঝার আশঙ্কাকে অবধারিত করে তুলছে। তারওপর নতুন নতুন ইস্যুর তোড়ে ডাইভারসনের পথে জুলাইর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা। ইস্যগুলো তালবেতালে মাঠে এনে তৈরি করা হচ্ছে ঘোর অস্থিরতা। মানুষ যে মুহুর্তে শান্তি চায়, নিরাপত্তা চায়; বিশেষ করে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ চায়, সে মুহূর্ত্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে চাপ দিয়ে মুচলেকা আদায়ের চেষ্টা প্রকট। একে গনঅভ্যুত্থানের গতি পাল্টে দেয়ার চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা প্রত্যাহার দাবি, আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে রিট, পরে রিট না চালানোর ঘোষণাকে ভালোভাবে দেখছেন না তারা। এই ভজঘটের সময়টাতে ঢাকায় কর্মব্যস্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। নির্বাচন, মানবাধিকার এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে ঢাকায় তার বেশ কয়েকটা বিশেষ এজেন্ডা। ঢাকা সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয় থেকে সাত জন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, সেনাবাহিনী প্রধান, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে মানবাধিকার ইস্যুর মধ্যে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত রয়েছে। নিরাপত্তা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কারে জাতিসংঘের কাছে সহযোগিতা চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এমন সময়ে রাজনীতির মাঠে নানা তুলকালামকাণ্ড। রাজনীতির এ ডামাঢোলে ২ হাজার মানুষ নাই হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অনেকটা উপেক্ষাতেই থেকে যাচ্ছে।
এমন সন্ধিক্ষণে দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে স্নায়ু চাপের সংযোগ দেখছেন রাজনীতি-কূটনীতি পাঠপঠনে চৌকসরা। চীন বিতর্কিত সীমান্ত নিয়ে বিরোধের ‘মীমাংসা’ করতে ভারতের সাথে চুক্তি নিশ্চিত করেছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সময় বেইজিং চুক্তির জন্য ‘ইতিবাচক অনুমোদনের’ ইঙ্গিত দেয়। এর মধ্য দিয়ে ‘ভারত ও চীন সীমান্ত চুক্তি শত্রুতা কমার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশ দুটির এই চুক্তি বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় এরইমধ্যে সেই প্রভাবের ছাপ পড়তে শুরু করেছে। চার বছর আগে ভারতের লাদাখে সংগঠিত সংঘর্ষে ভারতের অফিসারসহ বেশ কয়েকজন সেনা সদস্য নিহত হয়। পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে থাকলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যস্থতায় চীনের সঙ্গে ভারতের সমঝোতা হয়। এবারে রাশিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের সময় ভারত ও চীন সীমান্ত চুক্তি সম্পাদিত হলো।
পুরানো স্নায়ু যুদ্ধের সময় ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। তখন মুক্তিযুদ্ধাদের সহায়তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ভারত মিলে পাকিস্তান ভেঙ্গে ফেলে। বর্তমান স্নায়ু যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে যখন রুশ- ভারত এবং চীনের ঘণিষ্ঠ বন্ধু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ছাত্র জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে উৎখাত করেছে ঠিক তখনই বাংলাদেশকে সহায়তাকারী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এই ত্রয়ী। এর জেরে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব আরো বেশি বেড়ে যাচ্ছে এবং এই ত্রিশক্তিকে মোকাবেলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ওপর সার্বক্ষণিক নিরবিচ্ছিন্ন নজর রাখতে হচ্ছে। গত কয়েকদিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতার পেছনেও এর সংযোগ কিছুটা স্পষ্ট। তা বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতিতে নতুন ব্যবস্থাপনারও ইঙ্গিত। সেটি পুরনোকে নতুন ধারায় হবে, না নতুনকে পুরনোর সাথে মিলিয়ে ভিন্ন কোনো ক্যামিস্ট্রিতে হবে- সেই জিজ্ঞাসা ও গুঞ্জন এখন সবখানে।
লেখক ঃ সাংবাদিক ও কলামিস্ট।