• বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১০ অপরাহ্ন

ইরাকে বাংলাদেশী খুন, আস্তাকুড় থেকে ৩ টুকরা মরদেহ উদ্ধার

Reporter Name / ৪৮ Time View
Update : শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জীবিকার তাগিদে তিন মাস আগে দালালের মাধ্যমে ইরাকে গিয়েছিলেন রাজবাড়ির গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের আজাদ খান (৪৭)। সেখানে গিয়ে তিনি গত এক সপ্তাহ আগে মর্মান্তিক হত্যার শিকার হন বলে তার পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।

নিহত আজাদ খান জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হোসেন মন্ডল পাড়া গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে।

আজাদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে আজাদ ধার দেনা করে দালালের মাধ্যমে ইরাক যান। এক সপ্তাহ আগে ইরাকের বাগদাদ শহর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ১৮ বৃহস্পতিবার রাতে লিটন নামে অপর এক ইরাক প্রবাসী ফোন করে আজাদের পরিবারকে জানান, আজাদকে হত্যা করে তিন টুকরো করে লাশ বস্তায় ভরে ময়লার ভাগারে ফেলে রাখা হয়েছে। শহরের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে লাশের দুর্গন্ধ পায়। এ সময় তারা বস্তার মুখ খুলে দেখে মানুষের লাশ। তখন তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ তাদের হেফাজতে নেয়।

আজাদের স্ত্রী ময়না বেগম বলেন, স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে আমাদের পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেক ধারদেনা করে আমার স্বামীকে স্থানীয় বাবুলের মাধ্যমে তিন মাস আগে ইরাকে পাঠাই। তাকে যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল, বাবুল তাকে সেই কাজ না দিয়ে অন্য একটি কাজ দেয়। আমার স্বামী বাবুলের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু বাবুল তার কোনো ফোন ধরেনি। বাবুল ফোন ধরলে হয়তো আজ আমার স্বামীর এই করুণ পরিণতি হতো না। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।

নিহত আজাদের মা নবিরণ বেগম বলেন, আমার ছেলের লাশ ফেরত চাই। আমার বুকের ধনকে আইনা দেন। ওরে ছাড়া আমি কী করে বাঁচবো। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে ইরাক থেকে মুঠোফোনে বাবুল জানান, আমি ওকে যেখানে দিয়েছিলাম সেখান থেকে কুমিল্লার সোহাগ নামে একটি ছেলে তাকে নিয়ে অন্য জায়গায় একটি দোকানে কাজে দেয়। সেই দোকানের মালিক (কফিল) আজাদকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন ধরে বাড়িঘরের ময়লা ও আশপাশ পরিষ্কার করায়। এর মধ্যে আমি সোহাগকে ফোন করে আজাদের খবর জানতে চাই। সোহাগ আমাকে জানায়, আজাদ কফিলের বাসায় আছে। আজ শুনতে পাচ্ছি আজাদকে হত্যা করে লাশ তিন টুকরো করে ফেলা হয়েছে। আমরা ইরাকের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসিতে বিচার দিয়েছি। অ্যাম্বাসির লোকজনসহ আমরা সেখানে যাচ্ছি। আজাদের লাশ বাগদাদের একটি মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত আজাদের শ্যালক জহরুল হক বাপ্পি মোবাইলে বলেন, আজাদ আমার দুলাভাই (চাচাতো বোনের স্বামী)। আমি বাংলাদেশ দূতাবাস, ইরাক সচিবের সাথে কথা বলেছি, আজাদ ভাইকে মেরে ফেলে কয়েক টুকরো করা হয়েছে শতভাগ সত্য। মরদেহ ইরাকের মর্গে আছে। আগামী রবিবার আজাদের হত্যাকারী আসামি কফিলকে কাজুমিয়া আদালতে তোলা হবে। তিনি আরও জানান, আজাদ ভাইয়ের লাশ দেশে আনার চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আগামীকাল সরেজমিনে গিয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category