• বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪১ অপরাহ্ন

স্বৈরাচার গজানোর স্থায়ী  বন্দোবস্ত হতে দেরি কেন?  

Reporter Name / ২৩ Time View
Update : সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

-রিন্টু আনোয়ার
প্রতিটি মানুষের মনোজগতেই নিজেকে অন্যদের চেয়ে আলাদা ভাবার মানসিকতা কাজ করে। আর রাজনীতিতে, সরকারে, শাসনে কাজ করে একজন দাপুটে স্বেচ্ছাচার হওয়ার মোহ। কেউ বলে কয়ে স্বেচ্চাচার-স্বৈরাচার হয় না। একা একাও কেউ তা হতে পারে না। এ প্রশ্নে একজন শেখ হাসিনাও নিজে নিজে স্বৈরাচার হননি। তাকে স্বৈরাচার হয়ে উঠতে অনেকেরই অবদান রয়েছে। এ কাজে তার সহযোগী-সহকর্মী আলোচিত বহুজন। রাজনীতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, পুলিশসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টজনরা ‘যুগান্তকারী’ ভূমিকা রেখেছেন। এ থেকে বিশিষ্ট আলেম-ওলামারাও বাদ যাননি। শেখ হাসিনার  সব কাজেই বাতাস দিয়েছেন এসব বিশিষ্টজনেরা। সবসময় বলেছেন, আপনিই সঠিক। আপনার উপরে কেউ নেই, কেউ এতো বোঝে না। “প্রথমতঃ আমরা আপনাকে চাই,দ্বিতীয়ত আমরা আপনাকে চাই এবং শেষ পর্যন্ত আমরা আপনাকে চাই” জীবনে-মরনে আমরা আপনাকেই চাই। গোটা জাতিও আপনার বিকল্প দেখে না। আপনি ছাড়া এ দেশ চালানোর সক্ষমতা আর কারো নেই। আপনার বিরোধীতা যারা করে এরা সংখ্যায় নগণ্য। এরা উন্নয়নবিরোধী। স্বাধীনতাবিরোধী, কুলাঙ্গার-জঙ্গি। রাজাকারের নাতিপুতি।
তবে,দেশে-বিদেশে, যুগে যুগে স্বৈরাচার চেপে বসার পথপরিক্রমা কম-বেশি এমনই।  এই স্বৈরাচারেরই পতন হলে দেখতে হয় ভিন্ন দৃশ্যপট। এক যোগে হুক্কাহুয়া আওয়াজে জানান দেয়ার শুরু হয়, এই স্বৈরাচার পতনে কার কতো অবদান। কে কিভাবে এই ফ্যাসিস্ট পতনে কতো ভূমিকা রেখেছেন।
সময়রে ব্যবধানে বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশে স্বৈরাচার তৈরির রাস্তা বন্ধ করার জোর আলোচনা চলছে। ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকাতে সংস্কারের ফর্দ তৈরির কাজ চলছে। এতে কতোটা স্বৈরাচার ঠেকানো আর কতোটা একজন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ঠেকানোর চিন্তা-এ বিশ্লেষণও আছে।  এ প্রশ্নে দরকার মত ও চিন্তার স্থায়ী মিল তথা জাতীয় ঐকমত্য। সেখানে প্রাসঙ্গিক সংস্কার। তা অবশ্যই হতে হবে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে। এর ফয়সালা হয়ে গেলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি কেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরেই মহোৎসবের  সংসদ  নির্বাচন সম্ভব। যদিও বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের বেশির জনমনে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আবার ঐকমত্যের চলতি পথে এখন কেওয়াজ চলছে জুলাই সনদকে ঘিরে রাজনৈতিক সমঝোতার দলিলের পক্ষে-বিপক্ষে মতবিরোধ। অথচ এই সনদ শুধু রাজনৈতিক সংস্কারের রূপরেখাই নয়, এটি দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ। যা দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের ভিত্তি জোরদার করবে। নীতিগতভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে বিরোধ নেই। গোলমাল চলছে এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও উপায় নিয়ে। কাজে রাজি হলে শেষ পর্যন্ত উপায়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আলোচনার মধ্যে কথা এসেছে, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ এবং গণভোট নিয়ে। অতীতে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের নজির আছে। এটার ইতিহাসও দেশে আছে। আর এ ইস্যুতে দলগুলো একমত হতে না পারলে গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারের তিনটি প্রতিশ্রুতি ছিল। এর মধ্যে প্রথম ছিল সংস্কার করা। বিগত দিনে রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে যে ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতিতে ধ্বংস আবর্জনা তৈরি হয়েছিল, এটা দূর করে বাংলাদেশকে একটি নতুন পথে নিয়ে যাবে। দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি ছিল গণহত্যার বিচার এবং তৃতীয় ছিল উৎসবমুখর পরিবেশে ইতিহাসের নির্বাচন। অন্তপ্রাণে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চাইলে সব দলের একটা জায়গায় আসতেই হবে।  পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি তা কামনা করে না। এটাই স্বাভাবিক।
সংস্কারের পাশাপাশি জুলাইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের বিচার শুরু হলে তাদের কী দশা হবে, তারা ভালো করেই জানেন। ন্যায়বিচার মানে কেবল শাস্তি নয়। আর স্বৈরাচার না গজানোর ব্যবস্থা করা।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের দপ্তরকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রায় ১,৪০০ মানুষের প্রাণহানির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই সহিংসতা ছিল পরিকল্পিত, সংগঠিত এবং পূর্ববর্তী সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে পরিচালিত। জাতিসংঘের হাইকমিশনারের দপ্তর কেবল নিপীড়নের প্রামাণ্য নথি প্রস্তুত করেনি, বরং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে, তার জন্য একটি বিস্তৃত সুপারিশমালাও দিয়েছে।’ সরকার থেকে বলা হচ্ছে,বর্তমান সরকার মানবাধিকার সুরক্ষায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন দণ্ডবিধির সংশোধন,গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সনদে যোগদান এবং জাতিসংঘের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর। এই গুরুত্ব বিবেচনায় জুলাই আন্দোলন ঘিরে আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের আগে কোনো নির্বাচন না হওয়ার যুক্তির নেপথ্য এখানেই। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলার তাগিদেও তাই। সেখানে জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত যারা দেশে আছে তাদের খুঁজে বের করা দরকার। বিদেশে পালিয়ে থাকাদের দেশে ফিরিয়ে আনাও প্রাসঙ্গিক। বিচার, সংস্কার, নির্বাচনের সমান্তরালে আর কখনো যেন স্বৈরাচার জন্ম না নেয় সেই বন্দোবস্ত করার বিষয়ও রয়েছে। সময়ে সময়ে স্বৈরাচার জন্ম নেবে। মোটাতাজা হবে। জুলুম-নির্যাতন চালাবে। ছাত্র-জনতা এক হয়ে তাকে তাড়াবে। এটি কাহাতক? এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বেশ পরিস্কার। তিনি বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই যেন আমরা তাকে ধরে ফেলতে পারি। ১৬ বছর যেন আমাদের অপেক্ষা করতে না হয়।’
বাস্তবে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েও হচ্ছে না। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট দলের  শীর্ষ ও মাঝারি নেতারা তো চম্পট দিয়েছেন। তৃণমূলের নেতা কর্মীরা হয় নিষ্ক্রিয়, নয় কোনো মতে জান বাঁচাচ্ছে।  এমন একটি সুনশান সময়েও কেন স্বৈরাচার যেন আর না জন্মায়-এমন একটি সিদ্ধান্ত রচনা করা গেল না? এর জন্য দায়ী কে? আন্দোলন আনন্দের বিষয় নয়। শখের বিষয়ও নয়। মানুষ শখ করে আন্দোলনে নামে না। পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে  বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামে। এরপর সফল হয় বা ব্যর্থ হয়। কিন্তু, তা কখনো ই চলমান প্রক্রিয়া হতে পারে না। প্রথাগতভাবে দীর্ঘদিন একসাথে চলা- সবকিছু ভাগাভাগি করে নেয়া রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে যে রাস্তায় নামছে এটা গদি দখলের প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার মাঝে শেখ হাসিনার জন্মও হয়। শেখ হাসিনা কোন নির্বাচনে হারতে চাননি- তাকে যারা তাড়িয়ে চালকের আসনে বসছে তাদের কারো কারো মধ্যেও সেই রোগের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এ রোগ তাড়াতেই হবে। এটি আইনের সমস্যা নয়। সংবিধানের সমস্যাও নয়। পুরোটাই মনোরোগ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা চারটি পদ্ধতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। তবে,জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলো একাধিক পরামর্শ দিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। আশা করা যায় যে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তে একমত হতে পারবে। এ সময় তিনি গণভোট ও সাংবিধানিক আদেশ সংক্রান্ত বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে বিদ্যমান ভিন্নমত কাটিয়ে উঠে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
যে সংবিধানের আলোকে দেশ চলছে বা যে সংবিধানকে মুজিববাদ, ফ্যাসিবাদের সংবিধান বলে গালি দেওয়া হয়, সেটি বাহাত্তরের সংবিধান নয়; বরং সেটি জিয়ারও সংবিধান, এরশাদেরও। একাত্তরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে যে সংবিধান গৃহীত হয়, ওই সংবিধানে এখন পর্যন্ত ১৭ বার সংশোধন আনা হয়েছে। এতো সার্জিকেলেও রোগী সেরে ওঠেনি। এখন জুলাই সনদের আলোকে নির্বাচনের দাবি জোরদার। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংসদ গঠনের আগেই সাংবিধানিক ও সংসদীয় কাঠামোর সংস্কারের জন্য সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে মতামত চাওয়া যেতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগের পতনের পরে সংবিধানের এই বিধানের আলোকে, অর্থাৎ ১০৬ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে আপিল বিভাগের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। জুলাই সনদের ভূমিকায়ও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে এভাবে: “বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রেরিত প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন।”
৫ আগষ্টের পর তো সবাই একমত হয়েছিল যে,বিএনপির নেতৃত্বে একটা জাতীয় সরকার হবে। বিএনপিরও তাতে সম্মতি ছিল। পরে বিএনপি যখন বুঝলো যে,তাদের এককভাবে ক্ষমতা পাবার সম্ভাবনা আছে,তখন তারা সেখান থেকে সরে এলো। এর মধ্যে মঞ্চে আবির্ভুত হলেন বিএনপির আলোচিত নেতা সালাউদ্দিন  আহমেদ। এরপর থেকে জুলাই সনদ চূড়ান্তকরণে বিলম্ব। জামায়াত-এনসিপিও মোচড় দিয়ে বসেছে। বাস্তবতা হলো, গত বছরের ৫ থেকে ৮ অগাস্ট দেশে কোনো সরকার ছিল না। তাছাড়া, ১০৬ অনুচ্ছেদে আপিল বিভাগের যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সেটি ‘অ্যাবসোলিউট’ নয়। তারপরও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জামায়াত- এনসিপির ঝোক বেশি এ প্রস্তাবের দিকে। বিএনপির ও তার সমমনা রাজনৈতিক দল ও বাম দলগুলোর নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের কথা বলে আসছে। জামায়াত-এনসিপি বিশেষ অধ্যাদেশ বা গনভোটের দাবিতে অটল।
তাদের সবার নিয়ত যদি সাফ থাকে কোনো প্রস্তাবেই সমস্যা নেই। এখানে না বলা কথার মধ্যে চাপা পড়ে যাচ্ছে, আর যেন দেশে স্বৈরাচার না গজায় এ ব্যাপারে নিয়ত পরিস্কার করা। নিজেরা হাসিনা হবেন না, ভবিষ্যতে আর হাসিনা গজাতেও দেবেন না-এ সিদ্ধান্তে আসবেন কি-না? ছোট এ প্রশ্নটির নিস্পত্তি হওয়া চাই। সময়টা কিন্তু কারো জন্যই এবসলিউট ভালো নয়। আর যেন স্বৈরাচার জন্ম না নেয়, কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে ওঠে আলোকপাত বেশি দরকার সেদিকে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গেলেও সব রাজনৈতিক দলগুলো মিলে যথাযথ সংস্কার করতে হবে। জুলাই সনদে সবাইকে আসতেই হবে। এখান থেকে বের হওয়া বা সেই চেষ্টা করা প্রকারান্তরে পুরনো বন্দোবস্ত তথা স্বৈরাচারের আঁতুর ঘর টিকিয়ে রাখা। ছাত্র-জনতা চব্বিশে স্বৈরাচার তাড়িয়ে গণতন্ত্রের অভিযাত্রার যে সুযোগ করে দিয়েছে এটির খেলাপ যেন না হয়। যুক্তি-ব্যাখ্যার কোনো শেষ নেই।  বিতর্কের মধ্যে থেকে গেলে, তা স্বৈরাচারের পথকে প্রশস্ত করবে। সেই উপলব্ধিতে বোঝাপড়া মানে  ঐকমত্যের মাধ্যমেই ওই পথের শেষ রেখা টানতে হবে।
লেখক ঃ সাংবাদিক ও কলামিস্ট


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category