• শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পাওয়ার ৩ আমল

Reporter Name / ৯ Time View
Update : শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

বান্দার জন্য মহান আল্লাহর অশেষ নেয়ামতগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ‘হালাল সম্পদ’। এজন্য অনেক সময় সম্পদ না দিয়ে অভাব-অনটনের মাধ্যমেও রব তার বান্দার ঈমানের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। আবার কখনও দুনিয়াবি জীবনের এই পরীক্ষা হতে পারে শারীরিক কোনো রোগ-ব্যাধি কিংবা জীবন বা সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে।

তবে অভাব-অনটন কিংবা দুনিয়াবি যেকোনো পরীক্ষায় বিচলিত না হয়ে যারা মহান আল্লাহর হুকুম মেনে চলার পাশাপাশি নবীজির (সা.) আদর্শ এবং তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করেন তারাই আখিরাতে সফলকাম হবেন।

পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘জমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৭)

অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আযাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৭)

এজন্য অভাব-অনটনে নিরাশ না হয়ে মহান রবের কাছে দোয়ার পাশাপাশি নবীজির (সা.) আদর্শ ও তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ জরুরি। নিচে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে কুরআন ও হাদিসের আলোকে ৩ আমল তুলে ধরা হলো।

নিয়মিত ইস্তিগফার পাঠ

ইস্তিগফার হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। যেকোনো বিপদ-আপদে বেশি বেশি ইস্তিগফার পড়া অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি আমল। নিয়মিত বেশি বেশি ইস্তিগফার পাঠ করলে সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে যেমন সহজেই রক্ষা পাওয়া যায়, তেমনি এর ফলে অভাব-অনটন দূর হয়ে অকল্পনীয় স্থান থেকে মহান রব বান্দাকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন।

ইব্‌ন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার পাঠ করে, আল্লাহ তা’আলা তাকে সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত করবেন এবং সব রকম দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা করবেন এবং তার জন্য এমন স্থান থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারেন না। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১৫১৮)

অভাব-অনটন থেকে মুক্তি চেয়ে দোয়া

অভাব-অনটনের মাধ্যমে ঈমানের পরীক্ষার সময় মহান রবের কাছে দোয়া করা জরুরি। কারণ, বান্দা বিপদের সময় দোয়া করলে মহান রাব্বুল আলামিন খুশি হন। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহের দোয়া করো। কারণ আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর কাছে প্রার্থনা করা ভালোবাসেন। সর্বোত্তম ইবাদত হলো (ধৈর্য ধরে) বিপদ মুক্তির অপেক্ষা করা। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৭১)

এক্ষেত্রে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি চেয়ে নিচের দোয়াটি পড়তে পারেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ বলতেন-

اللّهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفَقْرِ، وَالْقِلَّةِ، وَالذِّلَّةِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَظْلِمَ أو أُظْلَمَ

বাংলা: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউয্যুবিকা মিনাল ফাকরি, ওয়াল কিল্লাতি, ওয়াজজিল্লাতি, ওয়া আউয্যুবিকা মিন আন আজলিমা আও উইজলামা।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দরিদ্রতা থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তোমার কম অনুকম্পা ও অসম্মানী থেকে এবং আমি কারও প্রতি জুলুম করা থেকে বা নিজে অত্যাচারিত হওয়া থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১৫৪৪)

সুরা মায়েদার ১১৪ নম্বর আয়াত পাঠ

পবিত্র কুরআনের ৫ নম্বর সুরা মায়েদায় একটি আয়াত রয়েছে, অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে ওই আয়াতটি পড়া যেতে পারে। আয়াতটি হলো-

اللّٰهُمَّ رَبَّنَاۤ اَنۡزِلۡ عَلَیۡنَا مَآئِدَۃً مِّنَ السَّمَآءِ تَكُوۡنُ لَنَا عِیۡدًا لِّاَوَّلِنَا وَ اٰخِرِنَا وَ اٰیَۃً مِّنۡكَ ۚ وَ ارۡزُقۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ

বাংলা: আল্লাহুম্মা রব্বানা আনঝিল্ আলাইনা-মায়িদাতাম মিনাস-সামায়ি তাকুনু লানা-ঈইদাল লিআউয়্যালিনা ওয়া আখিরিনা ওয়া আয়াতাম মিনকা, ওয়ারঝুকনা ওয়া-আন্তা খাইরুর-রাঝিক্বীন।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, হে আমাদের রব, আসমান থেকে আমাদের প্রতি খাবারপূর্ণ দস্তরখান নাজিল করুন, এটা আমাদের জন্য ঈদ হবে। আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য। আর আপনার পক্ষ থেকে এক নিদর্শন হবে। আর আমাদেরকে রিজিক দান করুন, আপনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category