পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নাম না জানা অসংখ্য ছোট-বড় দ্বীপ। তবে এমন কোন দ্বীপের নাম শুনেছেন যেই দ্বীপ মাত্র ৬ ঘণ্টা জেগে থাকে? হ্যাঁ এমনি একটি দ্বীপের নাম বিচিত্রপুর দ্বীপ।
ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের দিঘা অঞ্চলে অবস্থিত এই দ্বীপ ৬ ঘণ্টার জন্য দৃশ্যমান হয়। কেউ যদি অল্প খরচে দেশের বাইরে ঘুরে আসতে চান তাহলে তাদের জন্য আদর্শ জায়গা এটি।
প্রকৃতির সুন্দর লীলা খেলায় দাঁড়িয়ে আছে দ্বীপটি। এই দ্বীপে পা রাখলে প্রথমেই ভেসে আসবে পাখির কিচিরমিচির। তবে জোয়ারের সময় এই দ্বীপ খুঁজেও পাবেন না।
এটিই অবাক করার বিষয়।, ৬ ঘণ্টা জেগে থাকার পর পানির তলদেশে আবার তলিয়ে যায় এটি। তবুও কমে নেই পর্যটকদের আকর্ষণ।
কোথাও কোনো প্লাস্টিকের প্যাকেট বা বোতল চোখে পড়বে না। মনে হবে এই দ্বীপে এর আগে কেউ পদার্পণ করেনি। সুরক্ষার জন্য এই দ্বীপে মদ্যপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের এই দ্বীপে সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। কারণ জোয়ারের পানি দ্বীপে চলে আসার সময় মাত্র ৬ ঘণ্টা। তবে ভয় পাবার দরকার নেই। আপানার গাইড আপনাকে যথা সময়ে বোটে নিয়ে আসবে।
ফেরার পথে এশিয়ার সবচেয়ে বড় সূর্যমুখী বাগানের দেখা পাবেন এখানে। সানফ্লাওয়ার অয়েল তৈরির আঁতুর ঘরও বলা হয় একে ৷ তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে চলে আসতে পারেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
ট্রেনে উড়িষ্যার জলেশ্বর স্টেশন থেকে ৪৮ কিলোমিটার। সড়ক পথে সময় লাগে এক ঘণ্টা। এরপর হাওড়া থেকে ট্রেনে করে দিঘা যেতে হবে। তারপর সড়ক পথে আরও ১৪-১৫ কিলোমিটার। অটোতে দিঘা থেকে বিচিত্রপুর যেতে ৩০ মিনিট মতো সময় লাগে।
বিচিত্রপুর একেবারেই গ্রামীণ পরিবেশ। পথে দেখতে পাবেন তরমুজ খেত। সামনের আঁকাবাঁকা পথ পেরোলে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। এখান থেকেই শুরু বিচিত্রপুরের রহস্য। সুন্দরবনের রূপ-লাবণ্যের মতোই বেড়ে উঠেছে এই বিচিত্রপুরের ম্যানগ্রোভ।
উদ্ভিদ, প্রাণিকূলের বৈচিত্রে এ অরণ্য উড়িষ্যার অরণ্য দফতরের একবুক অক্সিজেন মেশানো খণ্ড। সমুদ্র আর ম্যানগ্রোভের গভীর প্রেমে জায়গাটি সত্যি মনোরম।
এই ম্যানগ্রোভ বনে পাবেন বন বিভাগের টিকিট কাউন্টার। টিকিট কেটে উঠে পড়ুন বোটে। এই স্পিড বোট আপনাকে নিয়ে যাবে মোহনার কাছাকাছি। যেটা সুবর্ণরেখা সাগরে মিলেছে। এখানেই স্পিড বোট নামিয়ে দেবে বিচিত্রপুর দ্বীপে।