• বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

তেমন একটা সাধুবাদ পাইনি সরকারের কাছ থেকে: সোহেল রানা

Reporter Name / ১৬৭ Time View
Update : রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩

সোহেল রানা, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক এবং জনপ্রিয় অভিনেতা। স্বাধীনতা সংগ্রামের সম্মুখযোদ্ধা হিসাবে খুব কাছ থেকে দেখেছেন অনেক কিছু। বেঁচে এসেছেন মৃত্যুর দুয়ার থেকে। মহান স্বাধীনতা দিবসের স্মৃতিচারণ এবং বর্তমান প্রসঙ্গ নিয়ে আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি

* আপনার রাজনীতি ও সংগ্রামী জীবন কখন থেকে শুরু হয়েছিল?

** আমার সংগ্রামী জীবন শুরু হয় ১৯৬১ সালে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়ার মাধ্যমে। তখন আমি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। ওই সময় দুটি রাজনৈতিক দল ছিল, একটি ছাত্র ইউনিয়ন, অপরটি ছাত্রলীগ। ১৯৬৫ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে ভর্তি হই। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হল (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছাত্রলীগের ভিপি ছিলাম। টানা ১৯৭২ থেকে ৭৪ পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করি।

* ’৭১-এ যুদ্ধে যাওয়ার আগ্রহ এবং চাওয়া কী ছিল?

** পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের মুসলিম ভাবলেও নানা বৈষম্য তৈরি করে রেখেছিল। বলা চলে, আমাদের তৃতীয় শ্রেণির মানুষ ভাবত। নানা রকম নির্যাতন করত, যেগুলো অসহনীয় ছিল। মনে-প্রাণে চাইতাম কবে আমরা স্বাধীন হব। ’৭১-এর যুদ্ধে আমার ইচ্ছাটাই ছিল কবে নাগাদ আমরা স্বাধীন হব। শেষতক আমরা মুক্তির পতাকা আনতে পেরেছি। একটি দেশ পেয়েছি।

* যুদ্ধে যাওয়ার জন্য কোন বিষয়টি আপনার মধ্যে খুব বেশি স্পৃহা জাগিয়েছিল?

** আগেই বলেছি পশ্চিম পাকিস্তানিরা অন্যায় ও জুলুম করছে আমাদের ওপর। তাই প্রতিশোধ নেওয়া কিংবা প্রতিরোধ করার সিদ্ধান্ত আগেই ছিল। কিন্তু একটি বিষয় আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে, বলা যায় যুদ্ধে যাওয়ার শক্তি আরও শতগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সেটি হলো, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইকবাল হলে থাকতাম। একদিন বিকালে বাসা থেকে হলে যাব, এমন সময় আমার ভাবি বললেন, ভালো রান্না হয়েছে আজ। হলে যেও না। ভাবির কথা শুনে আমি আর হলে গেলাম না। ওই দিন রাতেই আমার অনেক সহপাঠী মারা গেল, অর্থাৎ নিহত হলো। সেই রাতটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত।

* মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনি একটিমাত্র সিনেমা বানিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আর কেন বানাননি?

** ওরা ১১ জন আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ডকুমেন্টারি ফিল্ম। পুরোপুরি সিনেমা বলব না। এটি মুক্তির পর মানুষের যথেষ্ট ভালোবাসা ও সাফল্য পেয়েছি। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে তেমন একটা সাধুবাদ পাইনি। একটি চিঠি পর্যন্ত দেয়নি আমাকে। স্বাধীনতার এত বছর পরও বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা নির্মাণের জন্য সোহেল রানা সরকারের কাছ থেকে পুরস্কৃত হননি কিংবা একটি ধন্যবাদপত্রও পাননি। এতে করে এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে সামনে এগোনোর ইচ্ছা নষ্ট হয়ে গেল। তাই আর সেটি নিয়ে কাজ করা হয়নি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category