প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান। জন্ম ১৯৫৪ সালে। বাবা ছিলেন তুর্কি কোস্টগার্ডের এক নৌকার ক্যাপ্টেন। ঠিক যখন ১৩ বছরের বালক, সন্তানদের উন্নত জীবনের আশায় পরিবার নিয়ে চলে আসেন ইস্তাম্বুলে।
কিশোর এরদোগানের সংগ্রামী জীবনের শুরুটাও তখন থেকেই। স্কুলের মাসোহারা মেটাতে পথে পথে রুটি-লেবুর শরবত বিক্রি ইস্তাম্বুলের সেই অসহায় বালকটিই আজ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। তুর্কিদের ‘লৌহমানব’।
তুরস্কের গত দুই দশকের অপরাজিত নায়ক। তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ও সাবেক ফুটবলার রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ১৯৯৪ সালে ইস্তাম্বুল শহরের মেয়র নির্বাচিত হয়ে চলে আসেন রাজনীতির সম্মুখ সারিতে।
রাজধানী আঙ্কারা থেকে সাংবাদিক সরওয়ার আলম (যিনি তুরস্কের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন) বলেন, ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা সমাধান করে তিনি প্রথমে ওই শহরে এবং পরে সারা দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘আবর্জনা সমস্যা, বিদ্যুৎ সংকট, পানির সমস্যাসহ আরও যত ধরনের সমস্যা ছিল সেগুলো সমাধানের জন্য মেয়র এরদোগান আন্তরিকভাবে কাজ করেন। পরবর্তীকালে তুরস্কের রাজনৈতিক সমস্যা থেকেও তিনি সুবিধা পেয়েছেন। তৎকালীন জোট সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ার পর যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তিনি মানুষকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, কোনো একটি দল এককভাবে সরকার গঠন করলে দেশকে আরও স্থিতিশীলভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।’
এই প্রচারণায় সফল হন এরদোগান এবং ২০০৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
গত ২০ বছর ধরে তিনি দেশটির ক্ষমতায় আসীন। এরদোগান ১৯৫৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের ইস্তাম্বুলের কাছিমপাশা শহরতলিতে আহমদ এরদোগান ও তানজিলে হানিম দম্পতির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আহমদ এরদোগান পেশায় একজন জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন। পাঁচজন সহোদরের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
এরদোগান তার জন্ম সম্পর্কে বলেন, আমার আসল এলাকা ‘রিজে’। তবে আমার জন্ম কাছিমপাশায় ১৯৫৪ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি। পিয়ালেপাশা শহরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করেন এরদোগান। ১৯৬৪-১৯৬৫ সালে তিনি এখান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং ইমাম হাতিব স্কুলে ভর্তি হন।
ইমাম হাতিব স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি সমাপ্ত করে তিনি আয়ুব কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে তিনি ব্যবসায় শিক্ষা ও অর্থনীতি ইনস্টিটিউটে নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে উত্তীর্ণ হয়ে এখানে পড়ালেখা সমাপ্ত করেন।