ইরাকের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন সম্পর্কে কিছু নতুন তথ্য প্রকাশ করেছেন তারই এক কর্মকর্তা। খলিল আল-দুলাইমি নামের এই কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেনের আইনি সুরক্ষা দলের প্রধান ছিলেন।
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আল আরাবিয়া টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খলিল আল-দুলাইমি বলেছেন, সাদ্দাম হোসেনকে তার মুক্তির জন্য তাকে ভাইস প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে তিনি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
সাদ্দাম হোসেনের তৎকালীন আইনি কর্মকর্তা আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সাদ্দামকে ফালুজায় মার্কিন সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু তিনি সে প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
আল আরাবিয়া টেলিভিশনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মিডেল ইস্ট মনিটর।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদ্দামের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে আল-দুলাইমি বলেন, তিনি প্রথমে নিশ্চিত হতে পারেননি যে, তিনি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে কথা বলছেন। কারণ তাকে আটকে রাখা এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ফলে তার কঠিন পরিস্থিতির কারণে তিনি তাকে চিনতেই পারেননি। তবে তার সঙ্গে কথা বলার পর যখন তিনি কিছু ঘটনা উল্লেখ করেছিলেন তখন তাকে চিনতে পেরেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ৩ মার্চ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সাদ্দাম হোসেনের পতন ঘটাতে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে এবং তা ধ্বংস করার নাম করে দেশটিতে হামলে পড়ে মার্কিন ও তাদের মিত্র বাহিনী। যদিও এমন কোনো অস্ত্রের অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেট অনুমান করেছে যে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আগ্রাসনের তারিখ থেকে ২০০৬ সালের জুনের শেষ পর্যন্ত ইরাকে সাড়ে ছয় লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। পরবর্তীতে আরও হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে দেশটিতে।
তাছাড়া গণবিধ্বংসী অস্ত্র সম্পর্কে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, সেটা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, ইরাকে ক্ষমতার পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার জন্য সেটা ছিল একটি অজুহাত মাত্র।