ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার ‘ট্রান্সজেন্ডার’ কোটায় কেবল জন্মগত কারণে লিঙ্গ বৈচিত্রের অধিকারীরা ভর্তি হতে পারবেন। যারা যারা স্বেচ্ছায় নিজেদের লিঙ্গ রূপান্তরিত করবে তাদের কোটা ব্যবহার করে ভর্তির সুযোগ থাকবে না। ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বুধবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি থেকে ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি বাতিলের দাবিতে বেশ কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তাদের দাবি ট্রান্সজেন্ডার শব্দটির মাধ্যমে সমকামিতার বীজ বপন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছে।
আর এ দাবিতে বুধবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আরবি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মুনতাসীর আহমেদ মুয়াদ বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দটি আমাদের দেশীয় শব্দ নয়। এমনকি বাংলা একাডেমির কোনো অভিধানে কোথাও শব্দটির উল্লেখ নেই। তবে হিজড়া শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে hermaphrodite ও eunuch এর উল্লেখ থাকলেও এগুলো ব্যতীত অন্যকোনো শব্দের উল্লেখ নেই। এ অবস্থায় একটি বিতর্কিত শব্দকে কেন ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে এ শব্দ সংযুক্তির মাধ্যমে দেশীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছে। আমাদের দেশজ সংস্কৃতি রক্ষায় এ শব্দটি প্রত্যাহার করা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলা বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, হিজড়াদের কোটা থাকা যুক্তিযুক্ত কিন্তু ট্রান্সদের কোটা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই৷ নিজেদের বিকৃত করে কোটার দাবিদার হওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, এর গত ২১ ডিসেম্বর ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দ অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন এবং উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে একটি স্মারকলিপি দেন তারা। এসময় ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শব্দ দ্বারা ‘হিজড়া’ সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। তাছাড়া গত ৩০ ডিসেম্বর বিকালে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় ‘ট্রান্সজেন্ডার’ কোটা বাতিলসহ আরও তিন দফা দাবি তোলেন।