• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন

পাখিদের ‘শরবত’ শিমুল ফুলের রস

Reporter Name / ৮ Time View
Update : শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

শ্যামলিমার দিকে চোখ মেলে তাকালেই শুধুই তাক লাগানো শোভা!

শিমুল ফুল বসন্ত প্রকৃতির এক অনবদ্য উপহার। শিমুল তুলা তৈরি হয় এই ফুল থেকে। শিমুল তুলার বালিশের চাহিদা এবং দাম দুটো সর্বাধিক। তার মাঝে বড় আকৃতির এই ফুল প্রস্ফুটিত হয় বলেই হয়তো ক্রেতা সাধারণের মাঝে শিমুলের তুলার বড় চাহিদা।

সেই শিমুল ফুলগুলোই বর্তমানে প্রকৃতিতে সরবরাহ করছে পাখিদের সেই (ফুলের মধু) ‘শরবত’! যা সংগ্রহ করার জন্য সারাদিন শিমুল গাছে গাছে নানান প্রজাতির পাখিদের ভিড় লেগেই থাকে। সূর্য উঠার সকাল থেকে শুরু করে সূর্য ডুবে যাওয়ার শেষ বিকেল পর্যন্ত চলে গাছে গাছে পাখিদের এই মধু আহরণ। কী বিচিত্র কিচিরমিচির ডাক! তাতেই প্রাণ জুড়ায়। মন জুড়ায়।

 ভাত শালিকের শিমুল ফুলের রস আহরণ। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

ভাত শালিকের শিমুল ফুলের রস আহরণ। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

ফুলে ফুলে ভরে ওঠা শিমুলগাছ দূর থেকে দেখলে মনে হয় এ যেন রক্তিমবর্ণের এক গুচ্ছশোভা। ডালে ডালে প্রস্ফুটিত হয়ে আছে লোহিতরাঙা সংমিশ্রণ। সেখানে পাখিরা বসে ঠোঁট গুঁজে গুঁজে পরাগায়নের মাধ্যমে সঞ্চার করে চলেছে ফুলের প্রাণ। আহা!

সত্যি এ এক প্রাকৃতিক বিস্ময়! মাঝারি বা বিশালাকৃতির শিমুল গাছের জীবনসার্থকতার ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠার সম্ভার। পাখিদের ঠোঁটে ঠোঁটে তখন লেগে যায় ফুলের পরাগরেণু! কী অপরূপ সেই সৌন্দর্য!

বাংলা বুলবুল (Red-bented Bulbul), সিপাহি-বুলবুল (Red-whiskered Bulbul), ভাত শালিক (Common Myn), ঝুঁটি শালিক (Jungle Myna), পাকরা শালিক (Asian Pied Starling), খয়রালেজ-কাঠশালিক (Chestnut-tailed Starling), দাগি বসন্তবৌরী (Lineated Barbet), কালোমাথা-বেনে বউ (Black-hooded  Oriole), বাংলা কাঠঠোকরা (Black-rumped Flameback) প্রভৃতি পাখিদের বিরাট সমাহার এখন শিমুলের ডালে ডালে।

পাকরা শালিক পান করছে শিমুলের রস। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

পাকরা শালিক পান করছে শিমুলের রস। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

শুধু পাখি নয়, মধুকরের দল এসেও ফুলেদের মাঝে ভাগ বসিয়েছে। তাদের বিরামহীন মৃদুধ্বনি প্রকৃতির অন্যরকম এক বৃহৎ প্রাপ্তি! গাছের নিচে এসে দাঁড়ালে সহজেই শোনা যায় সেই মৃদু ধ্বনির বিরতিহীন গুঞ্জরন।

‘ভাত শালিক’ ফুলের মাঝে শুধু একটি চুমুক দিয়ে নয়, বারবার কয়েকটি চুমুক দিয়েই পান করে থাকে শিমুল গাছের প্রাকৃতিক এই শরবত! সেই পথটি অনুসরণ করে ‘বাংলা কাঠঠোকরা’। তারও ভাত শালিকের মতো এক চুমুকে হয় না। শরবতের স্বাদ চেখে দেখতে কয়েকটি চুমুক লাগে।

পাশের ডালেই ‘পাকরা শালিক’!‍ সেখানের একটি শিমুল ফুলে তখন থেকে মুখ গুঁজে আছে। অনেকক্ষণ ধরে এই পর্বটি সচল রাখার পর আসে সেই গাছে সমাপ্তির ক্ষণ।

তারপর ঠোটঁটি শিমুলের ডালের ওপর দুইবার আড়াআড়ি করে ঘসে তাৎক্ষণিক শরবত আহরণপর্বের ইতি টানে। যুগলবন্দিতে ছুটে যায় অন্য কোনো শিমুল ডালের উদ্দেশে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category