চট্টগ্রামে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রেমিকার বড় বোনকে ধর্ষণ করেছে এক দুর্বৃত্ত ও তার সহযোগীরা। ধর্ষণের পর কিশোরীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। কর্ণফুলী থানার কলেজ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাস দেড়েক আগে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ছোট বোনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সাজ্জাদ নামে একজনের পরিচয় হয়। পরে ছোট বোন সাজ্জাদের সঙ্গে দেখাও করে। ওই সময় সাজ্জাদ কৌশলে মেয়েটির মোবাইল ফোন থেকে একটি সিম খুলে নেয়। পরে মেয়েটি জানতে পারে সাজ্জাদ একজন সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ কারণে মেয়েটি তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সাজ্জাদ মেয়েটিকে ফোন করে সেই সিমটি ফেরত নিতে বলে। তাই ওইদিন সন্ধ্যায় নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকায় সিমটি আনতে যায় তার বড় বোন (ধর্ষণের শিকার কিশোরী)। ২ নম্বর গেটে যাওয়ার পর সাজ্জাদ বলে, সিমটি কর্ণফুলী সেতু (নতুন ব্রিজ) এলাকার একটি দোকানে ভুলে রেখে এসেছি। চলেন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে যাই। সেখান থেকে আপনাকে সিম দিয়ে দেব। কিশোরী অটোরিকশায় উঠতে না চাইলেও সাজ্জাদ জোর করে তুলে ফেলে। এরপর শাহ আমানত সেতু পার হয়ে কলেজ বাজার এলাকায় যাওয়ার পর আরও ৩-৪ চারজন অটোরিকশায় উঠে পড়ে। এরপর তারা অস্ত্র ও ছোরা ঠেকিয়ে কলেজ বাজার এলাকার একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে যায় তাকে। সেখানে রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত কিশোরীকে পালা করে ধর্ষণ করে সাজ্জাদসহ ৪-৫ জন। এক পর্যায়ে কিশোরী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এরপর তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। এর আগে অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কিশোরীকে মারধর করে তারা।
রাত প্রায় দেড়টার দিকে জ্ঞান ফিরলে ঘটনাস্থল থেকে সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা কিশোরীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে কর্ণফুলী থানার কলেজ বাজার এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর অন্য একটি অটোরিকশায় তাকে তুলে দেয়। রাত পৌনে ২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সে বাসায় ফেরে। খুলশি থানা থেকে জানানো হয়, ঘটনাস্থল যেহেতু কর্ণফুলী থানা এলাকা সেহেতু কর্ণফুলী থানাতে মামলা করতে হবে।
ঘটনাস্থল থেকে আনা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. আইয়ুব মিয়া বলেন, ‘রাত দেড়টার পরে কলেজ বাজার এলাকায় দেখি একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে আছে। ওই অটোরিকশা থেকে একজন আমাকে বলে, এই সিএনজি মেয়েটি তোল। যেখানে নামিয়ে দিতে বলে সেখানে নামিয়ে দিস।’
সিএনজিতে তোলার পর বুঝতে পারি মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। পরে মেয়েটিকে রাত ২টার দিকে ২ নম্বর গেট এলাকার বেবি সুপার মার্কেটে নামিয়ে দিই।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা বলেন, খুলশি থানায় গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থল ওই থানায় না হওয়ায় মামলা নেয়নি
ধর্ষণের শিকার কিশোরী বলে, ‘সাজ্জাদসহ সবার পায়ের পড়েছিলাম। বলেছিলাম আমার এমন সর্বনাশ তোমরা করিও না। আমাকে ছেড়ে দাও। তারপরও আমাকে রেহায় দেয়নি। ৪-৫ জন আমাকে পাশবিক নির্যাতন করেছ। নির্যাতনের এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমি ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘আমার থানা এলাকায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে-এমন বিষয় জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’