• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৯ অপরাহ্ন

২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা শুরু, চলছে প্রস্তুতি

Reporter Name / ২৮ Time View
Update : রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৪

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে তাবলিগ জামায়াতের বার্ষিক মহাসম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা। এবারও ছয় দিনে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। এখন চলছে প্রস্তুতি। ইজতেমা ময়দানে বিপুলসংখ্যক মানুষ গাজীপুর, ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে এসে দলে দলে ভাগ হয় স্বেছাশ্রম দিচ্ছেন। নিচু জমি ভরাট, সামিয়ানা টানানো, রাস্তাঘাট মেরামত ও পয়োনিষ্কাশন কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম পর্বে মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুসলি­রা অংশ নেবেন। ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সা’দ অনুসারীরা অংশ নেবেন। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমা।

ইজতেমা মাঠ সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তুরাগ তীরে প্রায় ১৬০ একর জমির ওপর তাবলিগ জামাতের সদস্যদের থাকার জন্য বিশাল চটের প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। মঞ্চ নির্মাণ, মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে টিনের চালা ও ইটের গাঁথুনির দেওয়াল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বিদেশি মেহমানদের আবাসন ব্যবস্থা। মুসলি­দের সুবিধার্থে খাবার পানি, অজুখানা, গোসলখানা সংস্কার, পুরোনো টিউবওয়েল, বাথরুম ও কাঁচা-পাকা টয়লেট সংস্কার, ইটের সলিং করা রাস্তা তৈরি ও পুরোনো ভাঙাচোরা রাস্তা-ড্রেন সংস্কার করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ লাইন, গ্যাস লাইন, পানির পাইপ লাইন, পানির ট্যাঙ্কি বসানো, বাঁশের খুঁটি বসানো, নামাজের দাগ কাটা, মাঠের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারসহ প্যান্ডেল সাজগোছের কাজ করা হচ্ছে।

ময়দানের পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব পাশের নিচু স্থানে বালু ফেলে উঁচু করা হয়েছে। মুসলি­দের যাতায়াতে যাতে কোনো রকম অসুবিধা না হয় সেজন্য তুরাগ নদে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা ভাসমান পন্টুন সেতু নির্মাণ করবেন। মাঠে মুসলি­দের অবস্থানও জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় (ভাগে) বিভক্ত করা হচ্ছে। ময়দানে তাবলিগ-জামায়াতের অনুসারী সদস্য, স্থানীয় মাদ্রাসা, স্কুল কলেজের ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারি-আধা সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দূরদূরান্ত থেকে এসে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এসব কাজ করছেন।

ঢাকার বাদামতলী থেকে শতাধিক মুসলি­ ইজতেমা ময়দানে এসেছেন স্বেচ্ছায় কাজ করতে। তাদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন বলেন, আল্লাহর কাজে এসেছি। যাতে আল­াহ খুশি হয়ে আমাদের গুনাহ মাফ করে দেন।

ঢাকার আশুলিয়া থেকে আসা মিয়াজ উদ্দিন বলেন, মনের আবেগে স্বেচ্ছায় কাজ করতে এসেছি। টঙ্গী বউবাজার নেকার বাড়ি মসজিদের ইমাম হাদীউজ্জামান বলেন, আমরা ৩০ জন এসেছি স্বেচ্ছায় কাজ করতে। আল্লাহর রাস্তায় কাজ করলে আল্লাহ খুশি হবেন।

ঢাকার দক্ষিণখান থেকে আসা মুফতি রাকিবুল হাসান বলেন, আমরা প্রায় ৭০ জন আল্লাহর জন্য দ্বীনের কাজ করতে এসেছি। আল্লাহকে রাজি খুশি করতে স্বেচ্ছায় শ্রম, অর্থ ও সময় দিচ্ছি।

চাঁদপুর জেলার কবির হোসেন বলেন, ইজতেমা ময়দানে কাজ করতে পারলে নিজেকে পূণ্যবান মনে হয়, তাই স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে এসেছি। যতদিন বেঁচে থাকব ততদিনই ময়দানের কাজ করে যাব।

মঞ্চ নির্মাণকারী আলমগীর হোসেন বলেন, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। বিদ্যুতের দায়িত্বে নিয়োজিত আ. মমিন বলেন, বিভিন্ন খুঁটিতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি ইজতেমা শুরুর আগেই সব কাজ শেষ হবে।

ইজতেমা ময়দানের ভেতরে রাস্তা মেরামত কাজে থাকা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশি কামরা থেকে মেহমানরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে বয়ান মঞ্চে ও আশপাশে যেতে পারে সেজন্য রাস্তায় সয়েলিংয়ের কাজ করছি।

মাওলানা জোবায়ের অনুসারী বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এগিয়ে চলছে ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ। ইতোমধ্যে ময়দানের প্রায় ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শেষ হবে, ইনশাআল্লাহ।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে মুসলি­দের সেবায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category