• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন

সংসদে জাতীয় পার্টির অবস্থান কী হবে এবার?

Reporter Name / ২৪ Time View
Update : সোমবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬টি আসনে ছাড় পেয়েছিল জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। সব মিলে এবার ২৬৫ আসনে দলটির প্রার্থী ছিল। শেষ পর্যন্ত ছাড় পাওয়া ২৬ আসনের ১১টিতে জিততে পেরেছেন জাপার প্রার্থীরা। সমঝোতার বাইরে কোনো আসনে দলের প্রার্থী জিততে পারেননি।

ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কমল। বর্তমানে দলটির ২৩ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন। আর সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য রয়েছেন চারজন।

বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাপার অবস্থান আগামী সংসদে কী হবে, সে আলোচনা শুরু হয়েছে দলটির ভেতরে এবং রাজনৈতিক মহলে।
কারণ আওয়ামী লীগের নেতারা যারা স্বতন্ত্র হয়েছেন, তারা জাপার চেয়ে অনেক বেশি আসনে জিতেছেন।

বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী, জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জয়ী হয়েছেন। তারা রংপুর, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালী থেকে নির্বাচন করেন।

এই চার জ্যেষ্ঠ নেতার বাইরে প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), একেএম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), একেএম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২) নির্বাচিত হয়েছেন।

রুহুল আমিন হাওলাদার ও আশরাফুজ্জামান ছাড়া বাকিরা বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদেরও সদস্য।

একাদশ সংসদের ২৩ সদস্যের মধ্যে ঢাকায় সৈয়দ আবু হোসেন, গাইবান্ধায় শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ময়মনসিংহে ফখরুল ইমাম, সুনামগঞ্জে পীর ফজলুর রহমান, কুড়িগ্রামে পনির উদ্দিন আহমেদ, নীলফামারীতে আহসান আদেলুর রহমান ও রানা মোহাম্মদ সোহেল, বগুড়ায় শরিফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জে লিয়াকত হোসেন, বরিশালে নাসরিন জাহান, বগুড়ায় নুরুল ইসলাম তালুকদারসহ ১৪ জন সংসদ সদস্য হতে পারেননি।

বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও তার ছেলে রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ এবার নির্বাচন করেননি।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় আসন না পেয়ে কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।

এর বাইরে রংপুরে মসিউর রহমান রাঙ্গা ও পিরোজপুরে রুস্তম আলী ফরাজী দল থেকে বাদ পড়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছেন। তারাও হেরেছেন।
রওশনপন্থি বলে পরিচিত রংপুর-১ আসনে মসিউর রহমান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জিয়াউল হক মৃধাকে জেতানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা জিততে পারেননি।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় এবার ঢাকায় একটি মাত্র আসন (ঢাকা-১৮) পায় জাপা। সেটি দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের স্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রাজধানীর উত্তরা, খিলক্ষেত, তুরাগ, উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকার এ আসনে শেরীফা কাদের জামানত হারিয়েছেন। তিনি হেরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে। নিপা গ্রুপের চেয়ারম্যান খসরু চৌধুরী ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক।

২০১৪ ও ২০১৮ সালেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে জাপা নির্বাচন করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাপাকে ৩৩টি আসন দেওয়া হয়েছিল। সেবার তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশে মন্ত্রিসভায় থাকে, আবার বিরোধী দলেরও ভূমিকা পালন করে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে সমঝোতার মাধ্যমে জাপা ২৩টি আসন পেয়ে সংসদে বিরোধী দল হয়। এবার দলটি গতবারের অর্ধেকের কম আসন পেল।

গতকাল রোববার দুপুরে রংপুর-৩ আসনের ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণের সময় জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, সব সময় আমাদের আশঙ্কা ছিল যে নির্বাচনে এসে আমাদের কুরবানি করা হবে। কুরবানি করে নির্ভেজাল, একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হবে। এসব আশঙ্কা সত্যি হয় কিনা, তা বিকাল হলেই বোঝা যাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category