সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাতে একটি সোফা ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে তিন প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের সবার বাড়ী নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায়।
তিন জনের পরিবার তাদের মৃত্যুর খবর পায়। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে নিহতদের পরিবার জানিয়েছে।
নিহতরা হলেন, সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের পলতি তারাবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে মো. ইউসুফ (৪৩), একই এলাকার বড় বাড়ির মীর আহাম্মদের ছেলে তারেক হোসেন বাদল (৪০) ও মাতইন আবদুল ওয়াহাব মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (৩০)।
আমিরাতে অবস্থানরত নিহত ব্যক্তিদের স্বজনরা দূতাবাসের মাধ্যমে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
নিহতদের পরিবার জানায়, তিন জনের পরিবার অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুর ঘটনা জানতে পারে। এরপর তিন পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীসহ শত শত মানুষ ছুটে আসেন নিহত তিন জনের বাড়িতে।
নিহত বাদলের বাবা মীর আহাম্মদ জানান, ৮ মাস আগে ইউসুফের ফ্যাক্টরিতে কাজ নেয় বাদল। বাদলের দুই ভাই প্রতিবন্ধী। তার সাজ্জাদ, জাহিদ ও আবীর নামে তিন ছেলে লেখা পড়া করছে। ছেলের শোকে বাবা মীর আহাম্মদ ও মা পেয়ারা বেগম বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন।
নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম ছেলে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। স্বামী রাসেলকে হারিয়ে স্ত্রী পান্না বিলাপ করছেন।
নিহত রাসেলের চাচা সাহাব উদ্দিন জানান, গত বছরের এপ্রিল মাসে ধার-দেনা ও কিস্তি নিয়ে রাসেল ইউসুফের সোফা ফ্যাক্টরিতে যায়। নিজের কোনো ভূমি বা বসতঘরও নেই রাসেলের। তার মা, স্ত্রী ও এক সন্তান চাচা আবদুস ছাত্তারের ঘরে থাকেন। কিস্তির টাকাও পরিশোধ করতে পারেননি রাসেল। রাসেলের কন্যা সন্তান প্রতিবন্ধী।
ডমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন জানান, আমিরাতে অগ্নিকাণ্ডে তার ইউনিয়নের তিন প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি এলাকার বাইরে থাকায় প্রতিনিধির মাধ্যমে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের খবর রাখছেন।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগুনে সেনবাগের তিন প্রবাসী নিহত হওয়ার খবর শুনিছি। তবে এ বিষয়ে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনরা থানায় কিছু জানায়নি।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহাবুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ খবর জানতে পারলাম। নিহতের পরিবারে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।