• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন

শখের আম বাগান বদলে দিয়েছে মাসুদের জীবন

Reporter Name / ৭৭ Time View
Update : রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩

স্বপ্ন ছিল আইন পেশায় নিয়োজিত হবেন। কিন্তু শখের আম বাগান বদলে দিয়েছে তার জীবনের গতিপথ। দুই লাখ টাকায় শুরু করা বাগান মাত্র ৫ বছরের ব্যবধানে বছরে আয় দিচ্ছে কোটি টাকা। ১০ কাঠার আয়তন এখন ৮ একরে। আমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন বিদেশি ফলও।

এই সফল উদ্যোক্তার নাম মাসুদ রানা। ২০১৮ সালে স্বল্প পরিসরে শখের আম বাগান গড়েন তিনি। বাগানে রোপণ করেন নামকরা বিভিন্ন জাতের আমগাছ। এসব আমের বংশ বিস্তার এবং চারা বিক্রি দিয়ে শুরু তার বাণিজ্যিক সফলতা। ইতোমধ্যে সুনাম কেড়েছে মাসুদ রানার ‘ঠাকুরগাঁও এগ্রো ট্যুরিজম অ্যান্ড নার্সারি’ নামের এই ফল বাগানটি।

মাসুদ রানার বাগানে বর্তমান ৬৫ জাতের আম রয়েছে। প্রায় ১৫-২০টি জাত রয়েছে বাণিজ্যিকভাবে চাষ উপযোগী। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য থ্রি-টেস্ট, কিং অব চাকাপাত, চিয়াংমাই, রেড আইভরি, আলফান্সো, কাটিমন, ব্যানানা, ন্যামডকসাই সিমুয়াং, কিউজাই, হানিডিউ, পালমার, ব্ল্যাক স্টোন ও ব্রুনাই কিং, সূর্যডিম, বারি-৪। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন জাতের ত্বিন ফল, কমলা, আঙ্গুর, লেবু ও মালটাসহ কয়েকজাতের আপেল গাছ।

মাসুদ রানার বাড়ি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়ন এবং ঠাকুরগাঁওয়ের দেবীপুর ইউনিয়নের মাঝামাঝি শ্যামাগাঁও এলাকায়। তিনি সেখানকার স্কুলশিক্ষক মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। মাসুদ রানা প্রথমে বাড়ির পাশের জমিতে, পরে বৃহৎ আকারে বাগান এবং নার্সারি সাজান। নাম রাখেন ‘ঠাকুরগাঁও এগ্রো ট্যুরিজম অ্যান্ড নার্সারি’।

তার এগ্রো ট্যুরিজম অ্যান্ড নার্সারিতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে বিশ্বখ্যাত ও সুস্বাদু লাল, বেগুনি এবং সবুজ রঙের বিভিন্ন জাতের আম। আমের পাশাপাশি থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ মালটা। সঙ্গে রয়েছে ছোট ছোট চারা গাছও।

কথা হয় এই সফল উদ্যোক্তার সঙ্গে। মাসুদ রানা জানান, এ বছর প্রায় ৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন তিনি। আর চারা গাছ বিক্রি করেছেন প্রায় ৫৭ লাখ টাকা। আরও ১০ লাখ টাকার চারা গাছ বিক্রির আশা করছেন। একইভাবে কমলা ও মালটার ফল এবং চারা গাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তার বাগানের উৎপাদিত আমের চাহিদা অনেক। জাত ভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব আম। পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। আগামী বছর এসব আম বিদেশেও রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। এই আমগুলোর জাত সংগ্রহ করেছিলেন থাইল্যাণ্ড থেকে। এছাড়া তুরস্ক ও জার্মানি থেকে ত্বিন ফল, কমলা, আঙ্গুর ও মালটার জাত সংগ্রহ করেছেন।

মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার নার্সারির সব চারা গাছ উন্নত জাতের। এসবের খাগড়াছড়ি ও বরিশালে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমি অনলাইনে চারা গাছ নিয়ে কাজ করে সাড়া পাচ্ছি। ভারত থেকেও অনেক অর্ডার পাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার এই এগ্রো ট্যুরিজম অ্যান্ড নার্সারি নিয়ে বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানেরও উদ্যোগ নিয়েছি। বর্তমান বাগানে প্রতিদিন ১০-১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এটা তাদের স্থায়ী কর্মসংস্থান বলা চলে।’

মাসুদ রানার এই সফলতায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেক যুবক। প্রতিনিয়ত তার এগ্রো ট্যুরিজম অ্যান্ড নার্সারিতে ভিড় করছেন বিভিন্ন জন। স্থানীয় অনেকে তার নার্সারি থেকে চারা গাছ নিয়ে বাগান সাজিয়েছেন। অনেকে আসছেন পরামর্শ নিতে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category