• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ন

সুপারির খোল দিয়ে বাসন তৈরি করে সফল আকরাম

Reporter Name / ১২১ Time View
Update : শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩

পিরোজপুর জেলার প্রায় সবাই সুপারি চাষ করেন। সুপারি বাংলাদেশের অর্থকরী ফসল। সুপারি দিয়ে পান খাওয়া ছাড়াও সুপারির খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব বাসন তৈরি করেছেন নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার কুরিয়াল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আকরাম হোসেন।

আকরাম হোসেন ইউটিউবে ভিডিও দেখে ৩ বছর আগে উদ্বুদ্ধ হন কারখানা করতে। তবে আর্থিক সমস্যা ও নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে সফল হয়েছেন। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই ঝুঁকছেন এ ব্যবসায়।

সরেজমিনে জানা যায়, জেলার অন্যতম নদী বেষ্টিত উপজেলা নেছারাবাদ। সুপারি চাষের জন্য যার সুনাম ও খ্যাতি আছে। আগে সুপারি গাছের খোল বন-জঙ্গলে পড়ে থাকতো। সুপারির সেই খোল থেকে বর্তমানে তৈরি হচ্ছে থালা, বাটি, ট্রে, নাস্তার প্লেটসহ নানা রকমের তৈজসপত্র।

jagonews24

‘এ আর ন্যাচারাল প্লেট’ কারখানায় এরই মধ্যে কর্মসংস্থান হয়েছে ৮ জনের। বাজারের প্ল্যাস্টিকের ওয়ানটাইম প্লেটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব এসব সামগ্রীর ব্যবহার শুরু হয়েছে পিরোজপুর, বরিশাল ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। কারখানাটি এ অঞ্চলের জন্য সম্ভাবনাময় শিল্প। বাণিজ্যিকভাবে আরও বড় করতে পারলে এলাকার অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এ পণ্যে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কারখানা মালিক আকরাম।

কারখানার শ্রমিক অনিক রায় বলেন, ‘আমাদের কারখানায় যা তৈরি করা হয়, তার কাঁচামাল পরিবেশ থেকেই আসে। এটি তৈরিতে কোনো রাসায়নিক বা কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। পণ্যগুলো ব্যবহার শেষে প্রকৃতিতেই মিশে যায়। যা প্রকৃতির জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে।’

নারী শ্রমিক হোসনেয়ারা বেগম বলেন, ‘সুপারির খোল সংগ্রহের পর এটি রোদে শুকাতে হয়। পরে আমরা এটিকে ধুয়ে কাঁচি দিয়ে কেটে মেশিনে পাঠাই। সেখান থেকে বাটি-প্লেটসহ নানা সরঞ্জাম তৈরি হয়।’

jagonews24

রোজিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা এ রকম একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান এর আগে এলাকায় দেখিনি। আগে কোনো কাজ না থাকায় ঘরে বসে থাকতাম। কারখানাটি হওয়ায় আমাদের এখন আর ঘরে বসে থাকতে হয় না। আগে খরচ চালানোর জন্য স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিতে হতো। এখন নিজেই আয় করি। যার কারণে পরিবারেও সচ্ছ্লতা ফিরেছে।’

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-ব্যবস্থাপক মিলটন চন্দ্র বৈরাগী বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা হিসেবে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা একটি অন্যতম শিল্পাঞ্চল। যেখানে আছে প্রচুর পরিমাণে সুপারি গাছ। এটি জেলার জন্য একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। এ বিষয়ে কাজ করার ব্যাপারে বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করার সুযোগ আছে।’

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘পিরোজপুরের নেছারাবাদে আকরাম হোসেন নামে এক ব্যক্তি সুপারির খোল থেকে পরিবেশবান্ধব দৈনন্দিন তৈজসপত্র তৈরি করছেন। যার ফলে পরিবেশে কোনো প্রকার বিরূপ প্রভাব পড়ে না। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category