• সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১০ অপরাহ্ন

সাত স্বর্ণ ব্যবসায়ী নজরদারিতে

Reporter Name / ৬৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঢাকা কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদাম থেকে সোনা গায়েবের ঘটনায় নজরদারিতে সাত স্বর্ণ ব্যবসায়ী।

গায়েবের বিষয়টি প্রায় ২০ দিন আগেই জানতে পারেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। জানার পর আত্মসাৎকারীদের খুঁজে বের না করে প্রথমে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম শাহেদ, শহিদুল ইসলাম এবং সিপাহি নিয়ামত হাওলাদার গুদাম থেকে সরানো ওই সব স্বর্ণ তাঁতীবাজারের দুই ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। আর টাকার ভাগ পেয়েছেন কাস্টম হাউজের অনেক কর্মকর্তাই। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চোরাই সোনা কেনা অন্তত সাত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন। তাদের যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ঢাকা কাস্টম হাউজের বেশ কয়েকজন এই সোনা চুরির সঙ্গে জড়িত। আমরা মামলা তদন্ত করে অনেকটা এগিয়েছিলাম। এখন ডিবি তদন্ত করবে।’

সোনা গায়েবের ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় হওয়া মামলাটি গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) যাওয়ার পর থানা হেফাজতে থাকা কাস্টমসের চার কর্মকর্তা ও চার সিপাহিকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিবি উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু বলেন, ‘থানা হেফাজতে থাকা আটজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনো কাউকেই গ্রেফতার দেখানো হয়নি।’

রোববার সোনা চুরির বিষয়টি কাস্টম হাউজের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। পরে রাতেই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এয়ারপোর্ট প্রিভেন্টিভ টিম) মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। এ ঘটনায় কাস্টমসের একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি অনুযায়ী হেফাজতে থাকা আটজনের মধ্যে তিনজন জড়িত। তবে তাদের গ্রেফতার না দেখানোর বিষয়টি রহস্যের জন্ম দিয়েছে। চার দিন ধরে আটজনকে হেফাজতে রেখেছে পুলিশ ও ডিবি।

এদিকে ঘটনার পর থেকে ঢাকা কাস্টম হাউজের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়নি। যদিও পুলিশের দাবি সোনা গায়েবের সঙ্গে কাস্টম হাউজের অনেকেই জড়িত রয়েছেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলার নীতিতে রয়েছেন কাস্টমসের শীর্ষ কর্তারা।

বুধবার সন্ধ্যায় ডিবি উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. আকরামুল হোসেন বলেন, এখনো কাউকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম শাহেদ ও শহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কাস্টম হাউজের গুদামের দায়িত্বে ছিলেন। বিমানবন্দরে আটক হওয়া অবৈধ সোনা ওই গুদামে রাখা হতো। তারা বিভিন্ন সময়ে গুদামের আলমারি থেকে সোনা সরিয়েছেন। এসব সোনা কত ক্যারেটের তা যাচাই করেছে রাজধানীর তাঁতীবাজারের দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহেদ ও শহিদুলের দীর্ঘদিনের সখ্য রয়েছে। মূলত তাদের মাধ্যমেই রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও তাঁতীবাজারের সোনার দোকানে বিক্রি করা হয়েছে গুদামের সোনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category